
পূর্ব মেদিনীপুর: জন্মদিনে প্রেমিক ও বান্ধবীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে তরুণীর মৃত্যু। ক্রমেই এই মৃত্যুর ঘটনাকে ঘিরছে ধোঁয়াশা। প্রথমে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছিল। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে আসতেই ঘটনা নতুন মোড় নিচ্ছে। সন্দেহ, ত্রিকোণ প্রেমের বলি হয়ে থাকতে পারেন খেজুরির ওই তরুণী। তদন্তকারীদের স্ক্যানারে প্রেমিক ও বান্ধবী। ইতিমধ্যেই তাঁদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
গত ২০ অগস্টের ঘটনা। খেজুরি- ২ ব্লকের দক্ষিণ শ্যামপুরের বাসিন্দা মূর্ছনা মণ্ডল (২৫) জন্মদিনে প্রেমিক ও বান্ধবীর সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি অসুস্থ বোধ করেন। এরপরই বাড়িতে ফোন করে জানান। স্থানীয় বটতলা থেকে জ্যেঠু গোবিন্দ মণ্ডল টোটোয় চাপিয়ে বাড়ি নিয়ে আসছিলেন মূর্ছনাকে। পরিবার সূত্রে খবর, টোটোয় ক্রমেই শরীর ছেড়ে দিচ্ছিল মূর্ছনার। বাড়িতে আনতেই হেঁচকি ওঠা শুরু হয়।
স্থানীয় জনকা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখান থেকে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার কথা বলা হয়। তবে পথেই মারা যান মূর্ছনা। প্রথমে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করে তালপাটিঘাট কোস্টাল থানার পুলিশ। পরে ময়না তদন্তের রিপোর্টে বিষক্রিয়ার নমুনা পাওয়া যায়।
মূর্ছনার মা দীপালি মণ্ডল জানান, জন্মদিনে স্থানীয় বটতলায় বেড়াতে গিয়েছিল মেয়ে। দীপালিদেবী বলেন, “সঙ্গে একটি ছেলে ছিল। তার সঙ্গে আমার মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আর ওর বান্ধবী। স্কুলে এক সঙ্গে পড়ত ওরা। ২০ তারিখ মেয়ের জন্মদিনে ওরা বেড়াতে গিয়েছিল। সেখানে তাদের মধ্যে কী হয়েছে না হয়েছে আমরা জানি না। পরে সন্ধ্যা নাগাদ মেয়ে ফোন করে ওর জ্যেঠুকে বাড়িতে নিয়ে আসার কথা বলে।”
পরিবার সূত্রে খবর, মূর্ছনা তাঁর জ্যেঠুকে জানিয়েছিল, প্রেমিক মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেয়। ১ সেপ্টেম্বর দিপালী মণ্ডল থানায় লিখিত অভিযোগে এই সমস্ত বিষয়েরও উল্লেখ করেছেন। দিপালী মণ্ডলের দাবি, মেয়ের মৃত্যুর আগে ওই বান্ধবী নিয়মিত বাড়িতে আসত। অথচ এতদিনে একবার খোঁজ পর্যন্ত করেনি। এই ঘটনায় প্রেমিক ও বান্ধবীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
কাঁথির মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সোমনাথ সাহা বলেন, “ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার পর জানা যায় বিষক্রিয়ায় ওই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। তারপরই পরিবারের তরফে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়। সেই মতো আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি।”