
পূর্ব মেদিনীপুর: ভোররাতে অন্ধকারে বিজেপির কাউন্সিলদের সঙ্গে ‘চুপিসারে’ পুরসভায় ঢুকছেন তৃণমূলের পুর-চেয়ারম্য়ান। যা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল এগরা পুরসভায়। আস্থা ভোট উঠল লাটে। রীতিমতো হাতাহাতির পর্যায়ে নামল বিজেপি ও তৃণমূল কাউন্সিলররা। এই ঘটনার মাঝেও সেই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়ালেন এগরা পুরসভার ‘নাছোড়বান্দা’ চেয়ারম্য়ান স্বপন নায়ক।
তাঁকে নিয়ে বিবাদের শেষ নেই। নভেম্বর মাসেই তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পীযূষ পান্ডার হাত হয়ে এগরা পুরসভায় পৌঁছেছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব নির্দেশ। তাতে বলা হয়েছিল, তড়িঘড়ি ইস্তফা দিতে হবে পুরসভার চেয়ারম্য়ান স্বপন নায়ক ও ভাইস চেয়ারম্যান সোমা চক্রবর্তীকে। কিন্তু পদ ছাড়তে নারাজ স্বপন বাবু। তাঁর দাবি, ‘চেয়ারম্যান করেছেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাই ইস্তফা দিলে, তাঁর নির্দেশেই দেব।’
এবার সেই চেয়ারম্যানের পদ নিয়ে সংঘাতের ঘটনায় নয়া মোড়। দলের হুইপ মানবেন না চেয়ারম্যান। তাই অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিলেন তৃণমূল কাউন্সিলররাই। শনিবার এই ভোটপর্ব হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভোট প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগেই বিজেপি ও তৃণমূল কাউন্সিলরদের মধ্যে হাতাহাতির উপক্রম ও উত্তেজনা ছড়ায়। স্থগিত হয় আস্থা ভোট।
তৃণমূল কাউন্সিলরদের অভিযোগ, ভোটাভুটির জন্য নির্ধারিত সময়ের অনেক আগে অর্থাৎ ভোররাতেই চেয়ারম্যান স্বপন নায়ক এবং বিজেপির অন্যান্য কাউন্সিলররা চুপিচুপি পৌরসভা ভবনে ঢুকে পড়েন। বেশ কিছু নথি নাড়াচাড়া করে তাঁরা। মূলত ভোট বানচাল করতেই এই ‘চক্রান্ত’।
শনিবার সকালে আগুনের গতিতে এই অভিযোগ ছড়িয়ে পড়ে। চেয়ারম্য়ানের বিরুদ্ধে সুর চড়ান তৃণমূল কাউন্সিলররা। একটি ভিডিয়োকেও হাতিয়ার কারা। যদিও টিভি৯ বাংলা সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি। অন্যদিকে, এই সকল অভিযোগ মানতে নারাজ চেয়ারম্যান স্বপন নায়ক। তাঁর দাবি, ‘কোনও বেআইনি কাজ করা হয়নি। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই উপস্থিত হয়েছি, যাতে কোনও বাধা ছাড়াই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারি। আগে আসার মধ্যে কোনও ভুল নেই এবং আইনত এতে কোনও বাধা নেই।’ বিজেপি কাউন্সিলরদের দাবি, ‘অশান্তি পাকাতেই এই চক্র’। আপাতত এই সংঘাতের জেরে স্থগিত হয়েছে এগরা পুরসভার আস্থা ভোট। পরবর্তী তারিখ এখনও নির্ধারণ হয়নি।