Coromandel Express Accident: জীবনে প্রথম ট্রেনে চেপেছিলেন সেদিনই, আতঙ্কে ঘুম ছুটেছে অভিশপ্ত করমণ্ডলের যাত্রী অপূর্বর
Coromandel Express Accident: ভাঙা জানালা দিয়ে কোনও ক্রমে বাইরে বেরিয়ে আসেন তিনি। পরে দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে একের পর এক দেহ।
তমলুক: ছোট থেকে গ্রামেই দিন কেটেছে। ফার্নিচারের কাজ করে সংসার চালানো অপূর্বর ট্রেনে চড়া হয়নি কখনও। মহিষাদলে স্ত্রী, সন্তানকে নিয়ে সংসার-যাপন। তবে একেই বোধ হয় বলে নিয়তি। প্রথমবার ট্রেনে চড়ে যা অভিজ্ঞতা হল, তা ভুলতে হয়ত অনেক সময় লাগবে তাঁর। রুজি-রোজগারের চেষ্টায় ভিনরাজ্যে যাবেন বলে যে ট্রেনে চেপেছিলেন তিনি, সেটাই অভিশপ্ত করমণ্ডল এক্সপ্রেস। গত ২ জুন যে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে যে ট্রেনের বহু যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। বেঁচে ফিরতে পেরেই নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছেন তিনি।
পেশায় কাঠের মিস্ত্রি মহিষাদলের অপূর্ব প্রামাণিক। দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে তাঁর সংসার । তবে সেই সংসারে অভাব-অনটন যেন নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে উঠেছিল। তাই আর উপায় না দেখে ভিনরাজ্যে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। ফার্নিচারের কাজের জন্যই চেন্নাই যাচ্ছিলেন বলে জানিয়েছেন অপূর্ব। সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন পরিচিত ব্যক্তি। তবে ভিনরাজ্যে যাওয়ার কথা তিনি স্ত্রীকে জানাননি। ভেবেছিলেন কর্মস্থলে পৌঁছে সবটা জানাবেন।
সঙ্গীদের সঙ্গে শালিমার স্টেশন করমণ্ডল এক্সপ্রেসে চাপেন অপূর্ব। প্রথম ট্রেনে চড়া। তাই জানালা দিয়ে প্রাকৃতিক দৃশ্য অনুভব করতেই ব্যস্ত ছিলেন তিনি। সন্ধ্যা নামার পরই সেই ভয়ঙ্কর ঘটনা। হাসপাতালের বেডে শুয়ে তিনি জানিয়েছেন, প্রথমে একবার ঝাঁকুনি লাগে। তাতেই কিছুটা হকচকিয়ে যাই। আর পরের ঝাঁকুনিতেই সব লন্ডভন্ড হয়ে গেল। রেলের পুরো কামরা একেবারে কাত হয়ে পড়ল। বেশ কয়েকজন ছিটকে এসে পড়ল আমার শরীরের উপর। কান্নার শব্দ কানে আসতেই তিনি বুঝতে পারেন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন তিনি।
এরপর ভাঙা জানালা দিয়ে কোনও ক্রমে বাইরে বেরিয়ে আসেন তিনি। পরে দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে একের পর এক দেহ। স্থানীয় মানুষজনের সাহায্যেই স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রে যান তিনি। আপাতত তমলুকের জেলা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন অপূর্ব প্রামাণিক। তবে রাতে চোখ বুজলেই সেই শব্দ, সেই দৃশ্য যেন ভেসে উঠছে চোখের সামনে। প্রায় এক সপ্তাহ কেটে গেলেও আতঙ্কে ঘুমই আসছে না তাঁর।