Rakhal Bera:আদালতের নির্দেশে পুলিশি হেফাজতে শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ রাখাল বেরা, খোঁজ চলছে চঞ্চলের

Rakhal Bera:জেলায় কান পাতলেই শোনা যায়, রাখাল ও চঞ্চল উভয়েই শুভেন্দুর 'অত্যন্ত কাছের লোক'। আর্থিক প্রতারণা কাণ্ডে তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশ হোয়াটস্যাপে কথোপকথন ও অন্যান্য় প্রমাণ হাতে পায়। সেই ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয় রাখাল বেরাকে।

Rakhal Bera:আদালতের নির্দেশে পুলিশি হেফাজতে শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ রাখাল বেরা, খোঁজ চলছে চঞ্চলের
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jul 01, 2021 | 10:07 PM

পূর্ব মেদিনীপুর: সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে আর্থিক প্রতারণা করার অভিযোগে আগেই গ্রেফতার হয়েছিলেন শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রাখাল বেরা (Rakhal Bera)। এ বার জেলায় দায়ের হওয়া একটি প্রতারণা মামলায় বৃহস্পতিবার ধৃতকে কাঁথি আদালতে তোলা হয়। আদালতের নির্দেশে চারদিনের পুলিশি হেফাজতে রাখাল। আর্থিক প্রতারণার ঘটনায় আরেক অভিযুক্ত চঞ্চল নন্দীরও খোঁজ করছে পুলিশ।

MONEY FRAUD CASE

নিজস্ব চিত্র

গত ৬ জুন চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে রাখালকে গ্রেফতার করেছিল মানিকতলা থানার পুলিশ। চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি রাখালের বিরুদ্ধে মানিকতলা থানায় অভিযোগ করেন সুজিত দাস নামে অশোকনগরের এক বাসিন্দা। তাঁর অভিযোগ, ২০১৯ সালে সেচ ও পরিবহন দফতরে গ্রুপ ‘ডি’ পদে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে তাঁর কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা নেন রাখাল (Rakhal Bera)। মানিকতলা ছাড়াও জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ এসেছে রাখাল ও সেচ দফতরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী চঞ্চল নন্দীর বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি, চাকরী প্রার্থী মিজানুর আলী খাঁন কাঁথি থানায় অভিযোগ করে বলেন, “শুভেন্দু অধিকারী তৎকালীন রাজ্য সরকারে  পরিবহন দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী। সেখানে চাকরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তাঁর দুই ঘনিষ্ঠ চঞ্চল নন্দী ও রাখাল বেরা (Rakhal Bera)। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে পরিবহন দফতরে কনডাক্টরের চাকরি করে দেবে বলে ১০ লক্ষ টাকা চায় দুজন। ওই মাসেই  স্ত্রী ও মায়ের গয়না বন্ধক রেখে ও বাবার ব্যবসায় গচ্ছিত ৬ লক্ষ টাকা কাঁথি পৌরসভা অফিসে শুভেন্দুবাবুর ঘনিষ্ঠ চঞ্চল নন্দীর হাতে তুলে দিই৷ দুজনই জানান বাকি টাকা অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার পেলে তারপরেই নেওয়া হবে।”

প্রতারিত মিজানুরের আরও অভিযোগ, ‘‘পুজোর সময় চাকরির অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার পেয়ে যাব বলে জানানো হয়৷ কিন্তু গত বছর নভেম্বরে শুভেন্দু অধিকারী মন্ত্রীপদ থেকে ইস্তফা দেন। তখনও ওঁরা বলেছিলেন, ভোটের পর শুভেন্দু অধিকারীর মুখ্যমন্ত্রী হলে ভাল চাকরি দেওয়া হবে। পরে, টাকা ফেরৎ চাইতে গেলে রাখাল (Rakhal Bera) ও চঞ্চল টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন। বাধ্য হয়ে সুবিচারের আশায় কাঁথি থানার পুলিশের দ্বারস্থ হই৷’’

উল্লেখ্য, জেলায় কান পাতলেই শোনা যায়, রাখাল ও চঞ্চল উভয়েই শুভেন্দুর ‘অত্যন্ত কাছের লোক’। আর্থিক প্রতারণা কাণ্ডে তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশ হোয়াটস্যাপে কথোপকথন ও অন্যান্য় প্রমাণ হাতে পায়। সেই ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয় রাখাল বেরাকে। একদা শুভেন্দুর ব্যক্তিগত সচিব হয়েও কাজ করেছিলেন রাখাল (Rakhal Bera)। শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ হওয়ায় কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের বড় পদকর্তাও হয়েছিলেন তিনি। নারদকাণ্ডে শুভেন্দুর ভূমিকা জানতে সিবিআইয়ের জেরার মুখে পড়েন রাখাল।

ঘটনাচক্রে, ২০১৯ সাল থেকে সেচ দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী ছিলেন শুভেন্দু। তার আগে তাঁর হাতে ছিল পরিবহন দফতর। এমনকী, ছয়টি জেলার কো-অর্ডিনেটরও ছিলেন অধিকারী পুত্র। ২০২০ সালে ডিসেম্বর নাগাদ পদত্যাগ করেন অধুনা বিজেপি বিধায়ক। ওই সময়তেই সেচ ও পরিবহন দফতরে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ ওঠে। এমনকী, খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেচ দফতরে ‘গোলযোগের’ তদন্তের নির্দেশ দেন। এরপরেই ধীরে ধীরে সামনে আসে রাখাল বেরা (Rakhal Bera) ও চঞ্চল নন্দীর নাম। যদিও, চঞ্চল নন্দীর খোঁজ তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।

প্রসঙ্গত, প্রাইমারি, আপার প্রাইমারি থেকে গ্রুপ ডি সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে ১৩৫ কোটি টাকার প্রতারণা করার অভিযোগে অলোক মাইতিকে কিছুদিন আগেই গ্রেফতার করে ময়না থানার পুলিশ। অলোক মাইতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে নির্বাচন আবহেই সুর চড়িয়েছিলেন বিজেপির বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপি সরকার এলে অলোক মাইতিকে পুলিশের হাকে তুলে দেওয়া হবে এমন মন্তব্যও করেছিলেন শুভেন্দু। যদিও, পাল্টা তৃণমূলের দাবী ছিল, অলোক মাইতির সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। বরাবরই শুভেন্দুর হয়ে কাজ করেছেন অলোক।

আরও পড়ুন: সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে ১৩৫ কোটি টাকার প্রতারণা! ‘শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ অভিযুক্ত’, তোপ তৃণমূলের