খেজুরি : খেজুরি বিস্ফোরণ কাণ্ডে (Khejuri Blast) এবার আরও তৎপর এনআইএ (NIA Probe)। বৃহস্পতিবার রাতেই খেজুরির তৃণমূল নেতার (TMC) বাড়িতে রাতে হানা দেয় এনআইএ-র তদন্তকারী দল। তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র ও বিশাল অঙ্কের নগদ টাকা। ঘটনা নিয়ে রাজ্যের শাসক শিবিরকে তীব্র কটাক্ষ করেছে বিজেপি। যদিও তৃণমূল শিবিরের বক্তব্য, গোটা ঘটনাটিই রাজনৈতিক চক্রান্ত। উল্লেখ্য, খেজুরি বোমা বিস্ফোরণে কাণ্ডে তদন্তে তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। খেজুরি বিধানসভা এলাকার একাধিক তৃণমূল নেতার বাড়িতে তল্লাশি চালান এনআইএ-র পদস্থ আধিকারিকরা৷ বৃহস্পতিবার রাতে বৃষ্টি মাথায় খেজুরি ছোট গরানিয়া এলাকার তৃণমূল নেতা তথা খেজুরি পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মদক্ষ শ্যামল দাসের বাড়িতে অভিযান চালান আধিকারিকরা। পাশাপাশি রামচকে বাটুল জানার বাড়িতেও চলে অভিযান।
তল্লাশি চালানোর সময় একটি পিস্তল ও নগদ ২ লাখ ৬৩ হাজার টাকা পাওয়া গিয়েছে বলে এনআইএ সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। এর পাশাপাশি সংগ্রহ করা হয়েছে আধার ও ভোটার কার্ডও। যদিও এনআইএ-র পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার রাতের এই অভিযান সম্পর্কে কোনও স্পষ্ট প্রতিক্রিয়া এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। বোমা বিস্ফোরণ কাণ্ডে তৃণমূল পঞ্চায়েতের প্রধান সহ কয়েকজনকে আগেই গ্রেফতার করেছিল এনআইএ। এদিকে বৃহস্পতিবার এনআইএ আধিকারিকদের এই তল্লাশি অভিযান নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
উল্লেখ্য,গত ৩ জানুয়ারি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার খেজুরির পশ্চিম ভাঙনমারী এলাকায় এক বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় দু’জনের মৃত্যু হয়। এলাকায় তাঁরা তৃণমূল কর্মীর হিসেবেই পরিচিত ছিল। বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় জখম হন আরও কয়েকজন৷ বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, বোমা বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল তাদের। যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সেই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ওই বিস্ফোরণের ঘটনার পর এলাকার গিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেখানেই এনআইএ তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন তিনি।
পরবর্তী সময়ে খেজুরি বোমা বিস্ফোরণের তদন্তের ভার নেয় এনআইএ। তদন্তে নেমে সমর শঙ্কর মণ্ডল, শেখ আরিফ বিল্লা ও শহিদুল আলি খানকে গ্রেফতার করেন এনআইএ তদন্তকারীরা। সমর শঙ্কর মণ্ডল খেজুরি জনকা অঞ্চলের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি ও জনকা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান ছিলেন। বাকি শেখ আরিফ বিল্লা ও শহিদুল আলি খানও এলাকায় দাপুটে তৃণমূল কর্মী হিসেবেই পরিচিত।
তবে এনআইএ এই অভিযান নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। খেজুরির স্বাস্থ্য কর্মদক্ষ তথা তৃণমূল নেতা পার্থপ্রতিম দাস বলেন, “এটা রাজনৈতিক চক্রান্ত। বিজেপি নেতাদের মদতে এমন কাজ করছেন। রাজনৈতিকভাবে পেরে না উঠে কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে এমন কাজ করছেন।” তৃণমূলের বিরুদ্ধে পাল্টা সরব হয়েছে বিজেপি শিবিরও। কাঁথি সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার দোলুই বলেন, “আমরা এই ঘটনার এনআইএ তদন্তের দাবি জানিয়েছিলাম। এনআইএ তার সঠিক তদন্ত করছে। তৃণমূল নেতার বাড়ি থেকে তল্লাশি চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে। খেজুরি তৃণমূল নেতার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র সহ টাকা উদ্ধার করেছে।”