
পূর্ব মেদিনীপুর: কর্দমাক্ত! এমনই অবস্থা পা ফেললে হাঁটু পর্যন্ত ডুবে যাচ্ছে কাদায়। সেই রাস্তা দিয়েই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল রোগীকে। সময় মতো হাসপাতালে পৌঁছতে না পারায় রাস্তায় মৃত্যু হল এক গৃহবধূর। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম বাসন্তী বেরা (৩৮)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পটাশপুর- ১ ব্লকের সুকেশ্বর থেকে অমরপুর, অমরপুর থেকে রাজ্য সড়কে যেতে প্রায় ৬কিমি রাস্তা দীর্ঘদিন ধরে বেহাল হয়ে রয়েছে। মোরামের এই রাস্তা বর্তমানে এমন পর্যায়ে রয়েছে যে পথচলা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে সাধারণ মানুষের।
রবিবার বিকালে বাসন্তী আচমকা ওই গ্রামের অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে টোটোতে করে ওই রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এমন সময় বেহাল রাস্তার মাঝেই মৃত্যু হয় ওই রোগীর। আর তাতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। তাঁদের দাবি, দীর্ঘদিন সারাইয়ের দাবি তুলেও কোনও কাজ হয়নি। তীব্র কটাক্ষ ছুড়েছে বিজেপি। যদিও শাসকদল তৃণমূলের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি।
অভিযোগ, অর্থ বরাদ্দের পরে গ্রামীণ সড়কে পিচ রাস্তা হয়নি। কয়েকদিন আগে এই রাস্তা সারাইয়ের দাবিতে অবরোধে সামিল হয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এরপর এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
এক গ্রামবাসী বলেন, “আমরা খবর পাচ্ছি, টাকা আসছে চারদিক থেকে। কিন্তু কেউ টাকা পকেটে পুরে নিচ্ছে। এলাকার যে প্রধান, কাজ না করলে কী হবে! সভাধিপতি কাজ করছেন না নিজের এলাকায়। শুধুই প্রচার ও ক্ষমতা দখলের লড়াই চলছে।”
কাঁথি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি তাপস কুমার মাঝি বলেন, “নির্বাচিত বিধায়ক, যিনি বর্তমানে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সভাধিপতি তিনি বিবৃতি দিয়ে বলেছিলেন, এই রাস্তার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। ১৫ দিন আগে অমলপুর গ্রামের বাসিন্দারা রাস্তার দাবিতে অবরোধ করেন। বিডিও সেখানে যান। রাস্তা সারাইয়ের আশ্বস্তও করেছিলেন। বিধায়ক বলছেন, রাস্তা হয়ে গিয়েছে, কিন্তু এলাকার মানুষ রাস্তার দাবিতে অবরোধ করছেন, আমি চাই মুখ্যমন্ত্রী গ্রিভ্যান্স সেলের তরফে তদন্ত করা হোক।”
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ সদস্য মৃণাল দাস বলেন, “১২ কিলোমিটার রাস্তা হয়ে গিয়েছে। বাকি ৬ কিমি রাস্তা পিচ হবে না ঢালাই, এই নিয়ে .গ্রামবাসীদের মধ্যে মতানৈক্য থাকার কারণে দেরি হচ্ছে। একটা সমাধান সূত্র বেরিয়েছে। দ্রুতই রাস্তার কাজ হবে। একসঙ্গে ১৭.২ কিমি রাস্তা মঞ্জুর হয়েছিল।” তবে এই মৃত্যুর দায় জনপ্রতিনিধিদেরই নিতে হবে বলে দায় স্বীকার করেছেন তিনি।