Pataspur Gun Shot: চায়ের দোকানে দুই বন্ধুর রাজনীতি-চর্চা, নিখাদ বিতর্ক হল রক্তাক্ত! বিভৎস দৃশ্যের সাক্ষী দোকানি
Pataspur Gun Shot: স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, সঞ্জীব ও তপন দীর্ঘদিনের বন্ধু। তাঁদের বন্ধুত্বও বেশ গাঢ় বলেই দাবি দুই পরিবারের। প্রতিবেশীরাও সেকথাই বলছেন।
পূর্ব মেদিনীপুর: দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফিরে চায়ের দোকানে বন্ধুর সঙ্গে রাজনীতি নিয়ে চর্চা। আলোচনা গড়ায় বিতর্ক, বিতর্ক ঝামেলায়। আর তা থেকেই চলল গুলি। পাড়ার চায়ের দোকানের নিখাদ রাজনৈতিক আলোচনা হল রক্তাক্ত। পুরভোটের আগে তপ্ত হল পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর। চলল গুলি। গুলিবিদ্ধ এলাকার তৃণমূল কর্মী তপন প্রধান। অভিযুক্ত তপনের বন্ধু সঞ্জীব নায়েক। সূত্রের খবর, পটাশপুরের উদয়পুরের বাসিন্দা তপন ও সঞ্জীব। সঞ্জীব কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকেন। সঞ্জীব বিজেপি সমর্থক বলে পরিচিত। সম্প্রতি তিনি গ্রামের বাড়িতে আসেন। চায়ের দোকানে দু’জনের মধ্যে রাজনীতি নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল। আলোচনা গড়ায় কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতিতে। আচমকা তপনকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন সঞ্জীব। গুলি লাগে তপনের কোমরে। তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার প্রেক্ষাপট
পটাশপুর ২ ব্লকের বড় উদয়পুর গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জীব নায়ক কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকেন। বাড়ির পাশে এক প্রতিবেশী তপন প্রধানের সঙ্গে একটি চায়ের দোকানে গল্প করছিলেন। এলাকার সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। তা থেকে বিতর্ক। আর বিতর্কের মাঝেই হাতাহাতি। একে অপরের গাড়ি ভাঙচুর করেন তপন ও সঞ্জীব। অভিযোগ, তখনই সঞ্জীব আচমকা পকেট থেকে বন্দুক বার করে গুলি চালিয়ে দেন তপনকে লক্ষ্য করে।
গুলি ছিটকে লাগে তপনের কোমরে। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। ঘটনার আকস্মিকতায় স্থানীয়রাও স্তম্ভিত হয়ে পড়েন। আকস্মিকতার রেশ কাটিয়ে উঠে আহত তপনকে তমলুক জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর সেখান থেকে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতায়। স্থানীয়দের রোষের মুখে পড়েন সঞ্জীব। তপনের মারে সঞ্জীবের মাথায় চোট লাগে।
আক্রান্ত সঞ্জীবকেও এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পটাশপুর থানার পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে আগ্নেয়াস্ত্রটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে, চলছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও।
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, সঞ্জীব ও তপন দীর্ঘদিনের বন্ধু। তাঁদের বন্ধুত্বও বেশ গাঢ় বলেই দাবি দুই পরিবারের। প্রতিবেশীরাও সেকথাই বলছেন। তবে দুজনের রাজনৈতিক মতাদর্শ আলাদা। তপন শাসকদলের কর্মী আর সঞ্জীব গেরুয়া শিবিরের সমর্থক। তা নিয়েই দু’জনের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়। যেরকমটা চায়ের দোকানে আখছার হয়েই থাকে। কিন্তু চায়ের দোকানের রাজনৈতিক চর্চা যে এই রূপ নিতে পারে, তা ভাবতেও পারছেন না স্থানীয় বাসিন্দারা।
প্রশ্ন উঠছে আরও একটি বিষয় নিয়ে। তপন ও সঞ্জীব এলাকায় ‘ভালো ছেলে’ বলেই পরিচিত। তাঁদের বিরুদ্ধে আগে তেমন কোনও গণ্ডগোলের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার রেকর্ড নেই। কিন্তু সঞ্জীবের কাছে বন্দুক এল কোথা থেকে? কেনই বা সঙ্গে করে বন্দুক নিয়ে ঘুরছিলেন সঞ্জীব? তাহলে কি লুকিয়ে কোনও অপরাধ জগতের সঙ্গে যুক্ত তিনি? পটাশপুর সীমান্তবর্তী এলাকা। এই বন্দুক তিনি কোথা থেকে জোগাড় করেছিলেন, তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পেরেছে, সম্প্রতি একটি জমি ভাগবাটোয়ারা নিয়ে দুজনের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল। তাই কেবল রাজনৈতিক কারণেই এই গুলি নাকি এর পিছনে পুরনো শত্রুতাও ইন্ধন জুগিয়েছিল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পাশাপাশি চায়ের দোকানে কীভাবে বন্দুকের রমরমা বাড়ছে, খতিয়ে দেখা হচ্ছে তাও।
এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, “পরিস্থিতি যে এমনটা হবে, তা বুঝতেই পারিনি। ঝামেলা হচ্ছিল, তেমনটা তো রাজনীতি নিয়ে অনেকের মধ্যেই হয়। তারপর দেখি মারপিট শুরু করল। একে অপরের গাড়ি ভাঙছে। আমরা সবাই গিয়ে আটকানোর চেষ্টা করি। কিন্তু আমাদেরই ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিচ্ছিল। তারপর কখন দেখি হঠাৎ গুলি চালিয়ে দিল একজন। অপর জন তখন রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে কাতরাচ্ছে। ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে এলাকায়।”
পটাসপুর লাগোয়া এগরায় নির্বাচন রয়েছে. এর প্রভাব সেখানে পড়বে না তো? প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।
বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা
বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা