‘ঘুষখোর!’ বিজেপিতে যোগ দিতেই ‘পোস্টার বিতর্কে’ তৃণমূলের কাউন্সিলর

পদ্ম শিবির প্রদত্ত সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা শাসক শিবিরের দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কেউ যুক্ত নয়।

'ঘুষখোর!' বিজেপিতে যোগ দিতেই 'পোস্টার বিতর্কে' তৃণমূলের কাউন্সিলর
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 23, 2021 | 8:50 PM

পূর্ব মেদিনীপুর: ভোট পর্ব মিটলেও বঙ্গযুদ্ধ থামেনি। দলবদল ও যোগদানকে কেন্দ্র করে একের পর এক পোস্টার বিতর্কে জড়িয়েছেন একাধিক রাজনৈতিক নেতা কর্মী। অধুনা বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বাগদার বিজেপি বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস; পোস্টার বিতর্কে নাম জড়িয়েছে অনেকের।  এ বার, বিজেপিতে (BJP) যোগদানের পরেই তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে পোস্টার পড়ল গোটা পাঁশকুড়া জুড়ে।

সূত্রের খবর, তৃণমূলে (TMC) থাকাকালীন পাঁশকুড়া পৌরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হন সুকুমার ভুঁইয়া। বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। কিন্তু, কাউন্সিলরের পদ ছাড়েননি। বুধবার সকালে দেখা যায়, পাঁশকুড়া পৌরসভার একাধিক এলাকার বিভিন্ন জায়গায় সুকুমারবাবুর বিরুদ্ধে পোস্টার পড়তে দেখা যায়। কী লেখা রয়েছে সেই পোস্টারে?

পোস্টারে লেখা রয়েছে, “ঘুষখোর কাউন্সিলর সুকুমার ভুঁইয়া, ওয়ার্ড নম্বর ১৮, পাঁশকুড়া পৌরসভা, সরকারি বাড়ি দেওয়ার নামে টাকা, সরকারি বার্ধক্যভাতা দেওয়ার নামে টাকা,সরকারি বাথরুম দেওয়ার নামে টাকা, সরকারি আমফানের দেওয়ার নামে টাকা, চাল চোর, ত্রিপল চোর, ত্রাণের মাল চোর। সমস্ত সরকারি পরিষেবা দেওয়ার নামে টাকা ফেরৎ চাই, ফেরত দাও নইলে ধলাই হবে, পিটাই হবে।” তবে কে বা কারা এই পোস্টার দিয়েছে তা নিয়ে ধন্দে রাজনৈতিক শিবির। বিজেপির অভিযোগ তৃণমূলের কর্মী সমর্থকেরাই এই কাজ করেছে।

স্থানীয় বিজেপি নেতা প্রতীক পাখিরা বলেন, ” সুকুমারবাবু বিধানসভা ভোটের সময়েই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসেন। তারপর থেকেই তাঁর পেছনে পড়েছে তৃণমূলের লোকজন। এর আগে একাধিকবার তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। এখন তো কেউ বিজেপি করলেই তাকে চোর বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া, তৃণমূলের কাছে আর কোনও অ্যাজেন্ডা নেই। সুকুমারবাবু এই ধরনের কোনও দুর্নীতির সঙ্গেই যুক্ত নন। আর যদি হয়েও থাকেন, তাহলে এতদিন কেউ কোনও প্রতিবাদ করল না, ওঁ বিজেপিতে আসার পরেই দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে গেল! এটা পুরোপুরি তৃণমূলের চক্রান্ত। আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। এরপর যা পদক্ষেপ করার তা সুকুমারবাবুই করবেন।”

পদ্ম শিবির (BJP) প্রদত্ত সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা শাসক শিবিরের দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কেউ যুক্ত নয়। পাঁশকুড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান নন্দ মিশ্র বলেন, “সুকুমারবাবু তৃণমূলের টিকিটে জনপ্রতিনিধি হয়েছেন। যতদিন তৃণমূলে ছিলেন ততদিন কেউ কোনও প্রতিবাদ করেননি। ওঁ বিজেপিতে যেতেই সকলে যখন ওঁর দুর্নীতির কথা বলছেন, তখন বুঝতে হবে তৃণমূলে (TMC) থাকতে সুকুমারবাবু দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। বরং, বিজেপিতে গিয়েই নিজের পদের জোরে দুর্নীতিতে যুক্ত হয়েছেন। তাই তাঁর বিরুদ্ধে পোস্টার পড়েছে। এই ঘটনায় তৃণমূলের কোনও যোগ নেই।”

ঘটনায়, কাউন্সিলর সুকুমার ভুঁইয়া জানিয়েছেন, দলত্যাগ করায় তাঁকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই তাঁর বিরুদ্ধে ভুলভাল পোস্টার দেওয়া হচ্ছে। থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন সুকুমারবাবু। এই ঘটনায় পুলিশি তদন্তের দাবিও করেছেন অধুনা বিজেপি নেতা।

আরও পড়ুন: দুষ্কৃতীদের ‘হামলায়’ ঠোঁট কাটা গেল তৃণমূল নেতার!