
পূর্ব মেদিনীপুর: ভরা মরশুমে সমুদ্রে মাছের আকাল মাথায় হাত মৎস্যজীবীদের। ফিশিংয়ের এক মাস কাটলেও রুপোলি ফসল দাগ কাটতে পারেনি দিঘায়। জুলাই মাসের মাঝামাঝি। মাছ ধরার ভরা মরশুমেও দিঘার সমুদ্রে মাছের আকাল। মাথায় হাত পড়েছে মৎস্যজীবীদের।
মৎস্যজীবীদের কথায়, গত কয়েক বছর ধরে দিঘার সমুদ্রে সে ভাবে মাছ উঠছে না জালে। ফলে সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া বা ফিশিংয়ের খরচ তোলাটাই দায় হয়ে পড়েছে মৎস্যজীবীদের কাছে। যার কারণে লোকসানে ভয়ে ভরা মরশুমেও অনেক ট্রলার পাড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। মৎস্যজীবীরা জানাচ্ছেন, ২০১৫ -১৬ সালের পর থেকে দিঘার সমুদ্রে ইলিশ সহ অনান্য মাছের পরিমাণ কমতে শুরু করেছে। বর্তমান সময়ে শুধু ইলিশ নয়, ছোট বড় নানা প্রজাতির মাছের ও আকাল দেখা দিয়েছে।
যদিও ভারত ও বাংলাদেশ এক সঙ্গে যদিও ব্যান পিরিয়ড পালন করার ফলে সমুদ্রে মাছ পরবর্তী সময়ে বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও আশাবাদী মৎস্যজীবী সংগঠনের কর্তারা। পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ও প্রাণী বিজ্ঞানীরা এমন পরিস্থির জন্যে সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র ক্ষতি ও বদলে যাওয়া পরিবেশকে কারণ হিসাবে মনে করছেন। পাশাপাশি সমুদ্রে মাছের আকাল দেখা দিতে পারে । ইলিশ-সহ বেশিরভাগ সামুদ্রিক মাছ গভীর সমুদ্রের মাছ । বর্ষার সময় ডিম পাড়ার জন্যে উপকূলের দিকে আসে।
দূষণ ,বটম ট্রলিং ,নির্বিচারে সামুদ্রিক মাছের শিকার কিংবা ডিম পাড়ার উপযুক্ত পরিবেশের অভাবের কারণে সমুদ্রে মাছের পরিমাণ কমতে পারে। সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন মৎস্যজীবী সংগঠন দিঘা ফিসারম্যান এন্ড ফিস ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশানের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস। তিনি বলেন, “প্রথমত ১৫ জুন ব্যান পিরায়ড উঠে যাওয়ার পর মাছ ধরার মরশুম শুরু হলেও একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে মাছ শিকারে যেতে পারেননি। দ্বিতীয়ত সেভাবে মাছ মাছ উঠছে না জালে।”
সমস্যার কথা স্বীকার করে পূর্বমেদিনীপুর জেলা মৎস্যজীবী ফোরামের সম্পাদক দেবাশিস শ্যামল বলেন, “শুধু সমুদ্রে নয় মাছ কমেছে নদী ,খাল বিলেও। যার কারণে সব চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ক্ষুদ্র মৎস্যজীবীরা। এই পরিস্থিতির জন্যে যথেচ্ছ ভাবে মাছের শিকার , বটম ট্রলিং, ছোট ফাঁসের জালের ব্যবহার দায়ী। যথেচ্ছ মাছ শিকারের ফলে সমুদ্রে প্রায় ৬০ শতাংশ মাছ কমে গিয়েছে । দিঘা উপকূলে ম্যানগ্রোভ নেই।”