
পাঁশকুড়া: একদিকে যখন সুপ্রিম নির্দেশে নতুন নিয়োগের পরীক্ষা নিল স্কুল সার্ভিস কমিশন, তখনই হাসপাতালে মৃত্যু হল এক চাকরিহারা শিক্ষকের। পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল তাঁরও। তবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় পরীক্ষা দেওয়া হয়নি। রবিবার সকালেই কলকাতার বেসরকারি হাসপাতাল থেকে বের করা হল ওই চাকরিহারা শিক্ষকের নিথর দেহ।
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় মেছোগ্রামের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি। রসায়নের শিক্ষক ছিলেন সন্তোষ মণ্ডল। স্বামীর মৃত্যুর জন্য মুখ্যমন্ত্রীকেই দায়ী করেছেন মৃতের স্ত্রী। পরিবারে নামল শোকের ছায়া।
চাকরি হারিয়েছিলেন। নতুন করে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে নতুন জীবন দেখার স্বপ্নও ছিল তাঁর। পরিবারের দাবি, চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছিলেন মেছোগ্রামের বাসিন্দা ওই সন্তোষ মণ্ডল। কোলাঘাট ব্লকের আড়িষান্ডা হাইস্কুলে কেমিস্ট্রি বিভাগে শিক্ষকতা করতেন তিনি। চাকরি হারানোর পর থেকেই রীতিমতো হতাশায় ভেঙে পড়েন তিনি।
সম্প্রতি তিনি একটি বাড়ি তৈরি করেছিলেন। ঋণ নিয়েই বাড়ি তৈরি করেছিলেন তিনি। মেচগ্রামে স্ত্রী ও দুই কন্যাকে নিয়েই বসবাস করতেন। মেদিনীপুরে থাকেন তাঁর বাবা, মা ও দিদি। মাথায় ছিল কয়েক লক্ষ টাকার লোনের বোঝা। তার উপর রয়েছে দুই কন্যা। দিন রাত এক করেই করতেন টিউশনি। পাশাপাশি রাতের পর রাত জেগে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
গত কয়েকদিন আগে হঠাৎ তিনি অসুস্থ বোধ করেন। পেটের যন্ত্রণা নিয়ে ভর্তি হন নার্সিংহোমে। প্রথমে পাঁশকুড়ায় পরে কলকাতায় ভর্তি করা হয়। পরিবার সূত্রে জানা যায়, তিনি ডাক্তারকে বারবার বলেছিলেন রবিবার তিনি এসএসসি পরীক্ষা দেবেন। পরীক্ষার সেন্টার পড়েছিল পাঁশকুড়া বালিকা বিদ্যালয়ে, কিন্তু পরীক্ষার দিনই সব আশা শেষ হয়ে গেল সন্তোষের। কলকাতার বেসরকারি হাসপাতাল থেকে রবিবার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর নিথর দেহ। রীতিমতো কান্নায় ভেঙে পড়ে পরিবারের সদস্যরা। এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।