
নন্দকুমার: পড়ুয়ারা কেউ দাঁড়িয়ে বা বসে। আর স্কুলের মধ্যেই হাতাহাতি করছেন প্রধান শিক্ষক ও সহ শিক্ষকরা। শুধু তাই নয়, উত্তপ্ত বাক্য-বিনিময়ও চলছে তাঁদের মধ্যে। যাকে চলতি ভাষায় বলে কলতলার ঝগড়া। আর গোটা বিষয়টিই দেখছে পড়ুয়ারা। এবার প্রশ্ন, যদি শিক্ষকরা স্কুলের ভিতরে এইরূপ আচরণ করেন, তাহলে ছোট-ছোট পড়ুয়ারা তাঁদের থেকে কী শিখবে? এই ঘটনায় পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত যে, ঘটনাস্থলে পৌঁছয় স্কুল দফতর ও পুলিশ আধিকারিকরা।
গণ্ডগোলের সূত্রপাত কোথা থেকে?
পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারের মল্লিক চক হাইস্কুল। সেখানে প্রধান শিক্ষক তারাপদ সিটের সঙ্গে সহ শিক্ষকদের বিভিন্ন ইস্যুতে দীর্ঘদিন ধরেই অশান্তি চলছিল। তবে আজ তা চরমে পৌঁছয়। শুরু হয় হাতাহাতি। জানা যাচ্ছে, এক অবসর প্রাপ্ত গ্রুপ-ডি (group d) কর্মী প্রধান শিক্ষকের অনুরোধে স্কুলে আসছেন। অভিযোগ, তাঁকে দিয়ে অন্যান্য শিক্ষকরা স্কুল রুম সহ ডাস্টবিন পরিষ্কার করাচ্ছেন। এই কাজে তিনি অসম্মানিত বোধ করে প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ করেন। তারপর স্কুল ছাড়ার কথা জানান তিনি। এই নিয়েই উত্তেজনা ছড়ায় স্কুল চত্বরে। প্রধান শিক্ষক ও সহ শিক্ষকদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। স্কুল শুরুর আগে গেটে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখায় অভিভাবকরা।
প্রধান শিক্ষক তারাপদ সিট বলেন, “আসলে আমায় তাড়াতে চাইছে। আমি কয়েক মাস আগে কোর্টের অর্ডার নিয়ে এখানে যোগদান করি। কিন্তু টিআইসি তাঁর পদ ছাড়তে নারাজ। ততদিন অমিতকুমার বেড়া প্রধান শিক্ষকের যাবতীয় কাজ করেছেন। আর এই কয়েকজন মাস্টার মশাই চাননি আমি থাকি। আসলে আমি থাকলে ওদের অনেক কাজে বাধা হতে পারি… ওরা শারীরিক, মানসিক ভাবে নিগ্রহ করেছে। এত গালিগালাজ করছে ছাত্রদের সামনে বলতেও পারব না। আমার জাত তুলে গালিগালাজ করেছে। বলছে, তোকে হেডমাস্টার হিসাবে মানি না। অমিত কুমার বেড়া পা তুলে বলছে জুতোর যোগ্যতা নেই। টিচাররা ক্লাস করেন না, ফিস্ট করেন।”
সহ শিক্ষক অমিত কুমার বেড়া বলেন, “আমরা যথা সময়ে ঢুকেছি। দেখলাম অভিভাবকরা স্কুলে তালা মেরেছে। আমি তিন বছর ধরে টিচার ইন চার্জ ছিলাম। স্কুলকে এক অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। উনি ফেরার পরই পড়ুয়া কম আসে। ক্লাস নেন না। অফিসের কাজের বাহানা নিয়ে ঘুরে বেড়ান। স্টাফরুমে মিটিংয়েও আসেন না। আমরা চাইছি গত তিন বছর ধরে স্কুল চলছে সেই মতোই যেন চলে।”