পূর্ব মেদিনীপুর: এমনিতেই বাংলায় শিক্ষার হাল নিয়ে কেন্দ্রের রিপোর্টে উদ্বিগ্ন শিক্ষাবিদরা। শিক্ষকের অভাবে রীতিমতো ধুঁকছে স্কুলগুলো। তার মধ্যে সামনে এল বেনজির ঘটনা। স্কুলে প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে শিক্ষিকাদের বচসা। এমনকি ক্লাসরুমের মধ্যেই চরম ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন। ব্যহত হয় পঠনপাঠন। আর তার জেরে স্কুল ছাড়ল প্রায় ৩০ জন পড়ুয়া। বন্ধের মুখে প্রাথমিক বিদ্যালয়। তমলুক শহরে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে তাম্রলিপ্ত হরিজন প্রাইমারি স্কুলে বেনজির ঘটনা। দ্রুত সমস্যার সমাধানের আশ্বাস প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের।
প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে দুই সহ শিক্ষকের নজিরবিহীন ঝামেলায় বন্ধের মুখে স্কুল। স্কুলে পড়়ুয়ার সংখ্যা ৩৭। তার মধ্যে ৩০ জন পড়ুয়া স্কুল ছেড়ে দিয়েছে। এই সমস্যা মেটাতে স্কুলের দুই সহ শিক্ষক শিক্ষিকা অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক থেকে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক, জেলা প্রাইমারি বিদ্যালয় সংসদ সভাপতির কাছে বার বার ছুটে গিয়েছেন। কিন্তু, পরিস্থিতি বদলায়নি। দুই সহ শিক্ষক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা দায়ের করেছেন প্রধান শিক্ষিকা। তারপর থেকেই অচলাবস্থা অব্যাহত।
তমলুক শহরে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে তফসিলি অধ্যুষিত ওই এলাকায় তাম্রলিপ্ত হরিজন প্রাইমারি স্কুলে বেশ ভাল পঠনপাঠন হত। মোট ৩৭ জন পড়ুয়া পঠনপাঠন করত। স্কুলে তিনজন শিক্ষক শিক্ষিকা ছিলেন। টিআইসি আরতি দাস অবসর নেওয়ার পর গত অগস্ট মাসে বর্ণালী মহেশ ঠেকুয়াবাজার চক্র থেকে বদলি নিয়ে ওই স্কুলে জয়েন করেন। বর্ণালী জয়েন করার পর থেকেই স্কুলে ঝামেলার সূত্রপাত।
ওই স্কুলে ২০১২সাল থেকে প্রিয়াঙ্কা অধিকারী এবং ২০১৪সাল থেকে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় সহ শিক্ষক হিসেবে আছেন। বর্ণালীদেবী তমলুক শহরের ওই স্কুলে জয়েন করার পরই দুই সহ শিক্ষক শিক্ষিকার সঙ্গে সংঘাতে জড়ান বলে অভিযোগ। সেই সংঘাতের জেরে স্কুলে তালা দিয়ে গত নভেম্বর মাসে দুই সহ শিক্ষক শিক্ষিকাকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হত বলেও অভিযোগ। বাধ্য হয়ে ওই দুই শিক্ষক-শিক্ষিকা এসআই অফিস, জেলা প্রাইমারি বিদ্যালয় সংসদ অফিসে দৌড়ঝাঁপ করেন। জেলা প্রাইমারি বিদ্যালয় সংসদ অফিসে তাঁদের নিয়ে শুনানি হয়েছে। তারপরও ঝামেলা মিটছে না।
স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকাদের মধ্যে ঝামেলা চলতে থাকায় পঠনপাঠন শিকেয় ওঠেছে। এই অবস্থায় ডিসেম্বর মাসে প্রায় ৩০ জন পড়ুয়া স্কুল ছেড়েছে। এই বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বর্ণালী মহেশ বলেন, “দুই সহ শিক্ষক শিক্ষিকা স্কুলের ঠিকমতো না আসায় সমস্যা হচ্ছে, বারবার এসআইকে জানিও কোন লাভ হয়নি। তাই পুরো ঘটনায় প্রধান শিক্ষিকা দায় চাপিয়েছেন এসআইয়ের উপর।’
ডিপিএসসি-র চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, “স্কুলে শিক্ষক শিক্ষিকাদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল। আমরা হেয়ারিং করে সমাধানের চেষ্টা করেছিলাম। দ্রুত সমস্যার সমাধান না হলে আমরা কড়া পদক্ষেপ নেব।”