পূর্ব মেদিনীপুর: ‘স্যার আমাকে স্বেচ্ছায় মৃত্যুর পারমিশন দেওয়া হোক ‘, শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ রাখাল বেরা কাঁথি মহাকুমা আদালতে কার্যত চিৎকার শুরু করেন সোমবার। এদিন কাঁথি থানার পুলিশ রাখালকে হাজির করে আদালতে। সেখানে বারবার সেচ্ছামৃত্যুর আর্জি জানাতে থাকেন দুর্নীতি কাণ্ডে অভিযুক্ত রাখাল।
বর্তমানে কাঁথি থানায় রাজ্যের বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ রাখাল বেরার বিরুদ্ধে দুটি মামলা চলছে। একটি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণা এবং অন্যটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণে ভর্তি করিয়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে মামলা।
তবে সোমবার কাঁথি মহকুমা আদালতে বিচারক জগৎজ্যোতি ভট্টাচার্যের এজলাসে রাখালকে তোলা হলে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণার মামলায় তিনি জামিন পেয়েছেন। কিন্তু অন্য মামলা অর্থাৎ, কম্পিউটার প্রশিক্ষণে ভর্তি করিয়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে আবারও চারদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। আর এই প্রেক্ষিতেই রাখাল কার্যত ভেঙে পড়ে। কোর্ট চত্বরে বিচারকের সামনে রাখাল জানান যে, তিনি আর বাঁচতে চান না।
যদিও রাখালের এই আবেদন মৌখিকভাবে আদালতে পেশ হয়েছে। আর আদলতও তাঁর এই আর্জিতে কোনও গুরুত্ব দেয়নি। রাখালের আইনজীবী অনির্বাণ চক্রবর্তী বলেন, “এই ধরনের আবেদন আইনত গ্রহণযোগ্য নয়। তবে তার উপর যেভাবে দিনের পর দিন মিথ্যা মামলা চাপানো হচ্ছে, বিভিন্ন ধারায় বিভিন্ন থানায়, সেই সব যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে এই ধরনের তিনি উক্তি করেছেন। উনি একজন ব্যবসায়ী মানুষ। তাঁর ওপর একের পর এক মিথ্যা মামলা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।”
এদিকে এই খবর বাইরে আসতেই শাসক ও বিরোধী একে অপরের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলছেন। জেলা তৃণমূল যুব সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি বলেন, “শুভেন্দু ঘনিষ্ট রাখাল মামলা থেকে বাঁচার জন্য বা সঠিকভাবে যাতে বিচার প্রক্রিয়া না করা যায়, তার জন্য এমন নাটক করছেন বলে শুনেছি। তিনি প্রতারিত করেছেন চাকরি প্রার্থীদের। তাই পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আর নিম্ন আদালতে স্বেচ্ছায় মৃত্যুর আবেদন করেছেন বলে শুনেছি। কিন্তু নিম্ন আদালতে মৃত্যুর আবেদন করা যায় না, তাও আবার মৌখিকভাবে। এই আর্জি আসলে মামলা থেকে বাঁচার কৌশল।”
উল্টোদিকে বিজেপি কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী বলেন, “এই সরকার ভণ্ড সরকার। অত্যাচার -অনাচার এবং মিথ্যা মামলা করে বিরোধীদের পর্যুদস্ত করাই এদের লক্ষ্যে। দিনের পরদিন শুভেন্দুবাবুর সহযোগী হিসেবে ওনাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হচ্ছে। তাই উনি আদালতে এমন আবেদন করেছেন বলেই খবর আছে আমাদের কাছে। এব্যাপারে সুশীল সমাজের ভাবার সময় এসেছে বলে আমি মনে করি।” আরও পড়ুন: ‘অর্জুন গড়ে’ তৃণমূল যুব সভাপতিকে ‘লক্ষ্য করে’ আচমকা গুলি!