নন্দীগ্রাম: গত ৩ মে, ভোটের ফলপ্রকাশের দিন নন্দীগ্রামে (Nandigram) বিজেপি কর্মী দেবব্রত মইতি-র উপর হামলার ঘটনা ঘটে। গত ১৩ মে কলকাতায় মৃত্যু হয় তাঁর। বিজেপি অভিযোগ করে পিটিয়ে মারা হয়েছে তাঁকে। পরবর্তীতে ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্তে নেমে সিবিআই দেবব্রত খুনে ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে। এবার সেই নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে আরও ১১ জনকে জেলা ঢোকানোর হুঁশিয়ারি দিলেন বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। এবার নাম না করে তাঁর ইঙ্গিত একুশের ভোটে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) -এর চিফ ইলেকশন এজেন্ট সেখ সুফিয়ানকে জেলে ঢোকাবার হঁশিয়ারি দিলেন বিরোধী নেতা।
বুধবার নন্দীগ্রামের সোনাচূড়ায় একটি ক্লাবের লক্ষ্মীপুজোর উদ্বোধনে এসে বাংলাদেশে মৌলবাদী আক্রমণের বিরুদ্ধে সরব হন শুভেন্দু অধিকারী। তার পর ভোট পরবর্তী হিংসায় দেবব্রতের মৃত্যুকেও এ পারের মৌলবাদী আক্রমণ বলে মন্তব্য করেন তিনি। সেখান থেকে শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি, “নন্দীগ্রামে দেবব্রত মাইতি খুনের ঘটনায় এগারোটা গুন্ডাকে জেলে ঢুকিয়েছি । জাহাজ ঘরের মালিক সহ আরও এগারোটা গুন্ডা বাইরে ছাড়া রয়েছে, তাদেরও জেলে ঢোকাব।” একটু থেমে তিনি যোগ করেন, ‘আমার নাম শুভেন্দু অধিকারী’।
কিন্তু জাহাজ ঘরের মালিক বলতে কাকে ইঙ্গিত করলেন শুভেন্দু? দেবব্রত মাইতির মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যে ১১ জনকে সিবিআই গ্রেফতার করেছে। শুভেন্দুর চোখে আরও এগারো জন দুষ্কৃতী বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। যার মধ্যে একজন জাহাজ ঘরের মালিক বলে দাবি তাঁর।
উল্লেখ্য, বছর সাতেক আগে নন্দীগ্রামের তেখালিতে সভা করতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেদিন নন্দীগ্রাম জেটিতে নেমে জহুরি মোড়ের কাছে পৌঁছে একটা বসতবাড়ি দেখে তিনি কার্যত হাঁ হয়ে যান। পাঁচতলা সেই বাড়ি নন্দীগ্রাম আন্দোলনের অন্যতম মুখ শেখ সুফিয়ানের। ‘মাশাল্লাহ’নামে সেই জাহাজের মতো দেখতে বাড়িতে আর ঢোকেননি মুখ্যমন্ত্রী। সভামঞ্চেই সুফিয়ানকে বলেছিলেন, ওই বাড়ি না বেচলে তাঁকে দল ছাড়তে হবে। যদিও সেই বাড়ি বেচেননি সুফিয়ান, দল-ও ছাড়েননি। এবার ভোটে তিনিই ছিলেন নেত্রীর চিফ ইলেকশন এজেন্ট। দেবব্রত মামলায় সিবিআই প্রথম সুফিয়ানকেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এদিন নাম করে তাঁকেই জেলা ঢোকানোর হুঁশিয়ারি দিলেন শুভেন্দু।
এ নিয়ে নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি শেখ সুফিয়ানের প্রতিক্রিয়া, “এটা প্রতিহিংসা মূলক কথা। আমি আগেও বলেছি, শুভেন্দু অধিকারী রাজনৈতিক প্রতিহিংসা করছেন। নন্দীগ্রামকে নিয়ে খেলা করছেন। আমরা জানি, সিবিআই একটা দলের দালাল। সংস্থার নিজস্ব সত্ত্বা নেই। মহালয়ার দিন শুভেন্দু বলছেন, ১১ জনকে গ্রেফতার করা হবে, হয়েওছে। কিন্তু আমরা জানি আমরা নির্দোষ। যাঁরা জেলে গিয়েছেন তাঁরা মাথা উঁচু করে ফিরবেন, আমরাও নির্দোষ প্রমাণিত হব।”
এর পর শুভেন্দুকে উদ্দেশ্য করে সুফিয়ানের পাল্টা হুঁশিয়ারি, “ওঁকেও জেলে যেতে হবে। ত্রিপল চুরি কেসে হাইকোর্টে গিয়েছেন। আগামীতে ওঁনারও অনেক ধাপ্পাবাজি ধরা পড়বে।”
আরও পড়ুন: Mamata: মার্ক্সবাদী, গান্ধীবাদী…মমতাবাদী! ঘাসফুলের নয়া শব্দকে কি সিলমোহর দিচ্ছে রাষ্ট্রবিজ্ঞান?