পূর্ব মেদিনীপুর: ঘটনাটি ২০১৮ সালের। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছিল রাজ্যের তৎকালীন মন্ত্রী তথা বর্তমান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) দেহরক্ষী শুভব্রত চক্রবর্তীর। সেই মামলায় তিন বছর পর এফআইআর দায়ের করলেন শুভেন্দুর প্রাক্তন দেহরক্ষীর স্ত্রী সুপর্ণা কাঞ্জিলাল চক্রবর্তী। কীভাবে এই ঘটনা ঘটল? সেই প্রশ্ন তুলে, সঠিক তদন্তের দাবিতে এবার এফআইআর করলেন নিহত দেহরক্ষীর স্ত্রী।
শুভব্রত চক্রবর্তী দীর্ঘদিন ধরেই শুভেন্দু অধিকারীর দেহরক্ষী ছিলেন। ২০১৮ সালে ১৪ অক্টোবর গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। শুক্রবার সকালে সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে শুভব্রতর স্ত্রী সুপর্ণা কাঞ্জিলাল চক্রবর্তী কাঁথি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এই মৃত্যু রহস্যের কারণ উদঘাটন করার দাবিতে এফআইআর করেন। তাঁর অভিযোগ, ঘটনাটি প্রথম থেকেই রহস্যজনক। কেন গুলি, কেনই বা এক জন মন্ত্রীর দেহরক্ষী হয়েও অ্যাম্বুলেন্স পেতে দেরি হল, একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
অভিযোগ পত্রে তিনি লিখেছেন, ২০১৮ সালে ১৪ অক্টোবর ঘটনার সময় তিনি স্কুলে কর্মরত ছিলেন। একটি ফোনে তিনি জানতে পারেন, তাঁর স্বামী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাঁকে কাঁথি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে পৌঁছন তিনি। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, তাঁর স্বামীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। দ্রুত তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করতে হবে। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স পেতে দেরি হওয়ায় কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার আগেই মৃত্যু হয় শুভব্রতর। এখানেই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর স্ত্রী। তাঁর সন্দেহ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই কি অ্যাম্বুলেন্স সেদিন দেরিতে এসেছিল? এফআইআর-এর বয়ানে সেই প্রশ্ন তুলেছেন।
আরও পড়ুন: কুর্সিতে বসার পরই বার্লা এড়ালেন পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবি, মুখে নয়া বার্তা…
কিন্তু ধোঁয়াশা অন্য জায়গায়। ২০১৮ সালের ঘটনার পর এতদিন কেন তিনি চুপ করে ছিলেন? স্বামীর মৃত্যুর পিছনে যে রহস্য রয়েছে, তা কি তাঁর বুঝতে দেরি হল? ২০২১ সালে এসে কেন তিনি এফআইআর করলেন?
সুপর্ণার বক্তব্য, তাঁর স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই একাধিক বিষয়ে সন্দেহ দানা বেঁধেছিল মনে। যেহেতু শুভেন্দু অধিকারী প্রভাবশালী মানুষ, তাই প্রথমেই তিনি মুখ খুলতে পারেননি। কিন্তু এখন যেহেতু পরিস্থিতি বদলেছে, তাই তিনি সাহস করে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
তবে তদন্তকারীরা বলছেন, এই ঘটনার কাটাছেঁড়া করতে গেলে বিরোধী দলনেতাকেও জেরার মুখে পড়তে হতে পারে। তদন্তের স্বার্থে তাঁকেও একাধিক প্রশ্ন করতে হবে। শুভেন্দু অধিকারীকে বাদ দিয়ে এই তদন্ত নিরর্থক।