
পাঁশকুড়া: চুরির অপবাদে কিশোরের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ফের নতুন করে উত্তেজনা ছড়াল পাঁশকুড়ার থানার গোসাইবেড় গ্রামে। এখানেই সিভিক ভলান্টিয়ার শুভঙ্কর দীক্ষিতের দোকানে চিপস কিনতে গিয়েছিল সপ্তম শ্রেণির ছাত্র কৃষ্ণেন্দু। পরিবারের সদস্যরা বলছেন, বারবার দোকানে ডাকাডাকি করেও কারও দেখা না পেয়ে শেষে দোকানের বাইরে পড়ে থাকা চিপসের প্যাকেট নিয়ে ফেরার পথ ধরে ওই কিশোর। অভিযোগ, তখনই ওই কিশোরকে ধাওয়া করে ওই সিভিক। চুরির অপবাদও দেয়। ভরা বাজারে কৃষ্ণেন্দুকে মারধরের পর কান ধরে ওঠবসও করা হয় বলে অভিযোগ। পরিবারের সদস্যরা বলছেন, ওই অপমান সইতে না পেরেই বাড়িতে ঢুকেই কীটনাশক খেয়ে নেয় ওই কিশোর। এড়ানো যায়নি মৃত্যু। তারপর থেকেই উত্তপ্ত এলাকা।
সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত পুলিশে কোনও অভিযোগ জানানো না হলেও ঘটনার পর থেকেই খোঁজ মিলছে না অভিযুক্ত সিভিকের। এদিন সন্ধ্য়াতেও অভিযুক্তের বাড়ির সামনে কিশোরের দেহ রেখে বিক্ষোভ দেখান এলাকার বাসিন্দারা। খবর পেয়ে পাঁশকুড়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু, পুলিশ দেখে আরও ফুঁসে ওঠেন এলাকার লোকজন। পুলিশের সঙ্গেই শুরু হয়ে যায় বচসা। শেষে পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। ৫ জন গ্রামবাসীকেও আটক করেছে পুলিশ। এলাকায় নেমেছে র্যাফ-কমব্যাট ফোর্স।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ২০১৩ সালে সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজ পান শুভঙ্কর। তিনি ছাড়াও রয়েছেন তাঁর দাদা। দাদা আগে কাপড়ের দোকানে কাজ করতো। পরে দুই ভাই মিলে মিষ্টির সঙ্গেই ফাস্টফুডের দোকান করে। সেই দোকানেই এদিন চিপস কিনতে গিয়েছিল সপ্তম শ্রেণির কৃষ্ণেন্দু। শুভঙ্করের বাড়িতে এক মেয়ে, এক ছেলে রয়েছে। যদিও শুভঙ্কের স্ত্রী নিশা দিক্ষীত বলছেন তাঁর স্বামীকে ফাঁসানো হচ্ছে। তিনি বলছেন, রবিবার ঘটনার দিন তাঁর স্বামী দোকানে গিয়েছিলেন। ওইদিনই বাচ্চাটা আসে। দোকানি দোকানি বলে চিৎকারও করছিল। নিশা বলছেন, “আমার স্বামী উপর থেকে নিচে গিয়ে দেখে বাচ্চাটা নেই। এলাকার লোকজন বলে একটা বাচ্চা এসে তিনটে চিপসের প্যাকেট নিয়ে চলে গিয়েছে। ও দূর থেকে দেখতে পায় বাচ্চাটাকে। সাইকেলে যাচ্ছিল। ও পিছু পিছু ধাওয়া করে বাইক নিয়ে। ওকে দেখেই ভয়ে চিপসের প্যাকেটগুলো ফেলে দেয়। টাকা দিতে যায়। ও তখন ওকে ওর কাজের জন্য বকা দিয়ে ছেড়ে দেয়। ছেলেটা ভুল হয়ে গিয়েছে ক্ষমা চাইতে থাকে। সবটাই এলাকার লোকজন দেখে।” কৃষ্ণেন্দুর মা-বাবার অভিযোগ, চিপসের দামও দেওয়ার পরেও হেনস্থা করা হয়েছিল। শেষে কিশোরের মা ঘটনাস্থলে গিয়ে ছেলেকে শাসন করে বাড়ি নিয়ে আসেন।