নন্দীগ্রাম: ১৬ বছর পরও বাংলার রাজনীতিতে গুরুত্ব হারায়নি ১৪ মার্চ। ২০০৭ সালের সেই দিন থেকেই কার্যত বদলাতে শুরু করেছিল বাংলার রাজনৈতিক মানচিত্র। তবে বিগত ১৬ বছরে রাজনীতির জল গড়িয়েছে অনেক। নন্দীগ্রামের (Nandigram) ‘শহিদ’ আসলে কার? সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। শহিদ দিবস নিয়ে কার্যত দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছে, দু ভাগ হয়েছে মঞ্চ। এবারও কি সেই একই ছবি দেখবে বাংলা?
২০০৭-এর ১৪ মার্চ বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল নন্দীগ্রামের ১৩ জন কৃষক সহ মোট ১৪ জন আন্দোলনকারীর। তারপর হলদি নদী দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল। রাজনীতির কারবারিরা বলেন, কৃষকদের রক্তের বিনিময়েই রাজ্যে রাজনৈতিক পালা বদল ঘটে ২০২২ সালে। আর শুভেন্দু অধিকারীর দলবদলে এসেছে আরও একটা বদল। সেই শহিদের নন্দীগ্রামে আজ বিজেপির বিধায়ক শুভেন্দু। তাই দুই মঞ্চে আলাদাভাবেই হয় অনুষ্ঠান।
মঙ্গলবার নন্দীগ্রামের ভাঙাবেড়া ও গোকুলনগর অধিকারী পাড়ায় সকালে শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন তৃণমূল নেতা তথা নন্দীগ্রাম ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি শেখ সুফিয়ান। আবার দিনটিকে পৃথকভাবে পালন করবেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ভাঙাবেড়াতেই শহিদ বেদীতে উপস্থিত থাকবেন তিনি। অধিকারী পাড়াতেও শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করবেন শহিদদের উদ্দেশে।
তবে বিজেপি তথা শুভেন্দুর ভূমিকা মানতে নারাজ শেখ সুফিয়ান। তিনি বলেন, ‘এখানে তখনও বিজেপির জন্ম হয়নি। শুভেন্দু কোনওদিনই ভূমি উচ্ছেদ কমিটিতে ছিলেন না।’ তিনি জোর করে শহিদ দিবস পালন করছেন রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য। এবারের অনুষ্ঠানে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও যুব নেত্রী সায়নী ঘোষ উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, নন্দীগ্রামে শহিদদের পরিবারের আত্মত্যাগের সঙ্গে কারও তুলনা চলবে না। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, ‘নন্দীগ্রামে যা উন্নয়ন হয়েছে, তা আমার উদ্য়োগেই। মুখ্যমন্ত্রী এখানে কিছুই করেননি।’
উল্লেখ্য, সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, সকাল ৮টা থেকে সকাল ১০ টার মধ্যে সভা করতে হবে শুভেন্দুকে। সকাল সাড়ে ১০ টার মধ্যে জায়গা খালি করে দিতে হবে। মামলাকারীরা শান্তিপূর্ণ মিছিল করবে, কোনওভাবেই যাতে জনজীবন ব্যাহত না হয়। একই সময়ে দুটি রাজনৈতিক দলকে অনুমতি দেওয়া হলে আইন শৃঙ্খলা সমস্যা হতে পারে। তাই আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, বেলা ১১টা থেকে ৩টে’র মধ্যে তৃণমূল মিছিল করতে পারবে। পৃথক রাজনৈতিক দলকে সময় ভাগ করে মিছিল করার অনুমতি দিয়েছে হাইকোর্ট।