কাঁথি : মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে পথে নেমেছিল তৃণমূল। মিছিল শেষে সভা করে তৃণমূল নেতৃত্ব। আর সেই সভাতেই ঘটে গেল বিপত্তি। সভায় বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি। শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করেছেন তিনি। এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু বিপত্তি হল সভার শেষে। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার সময় জাতীয় সঙ্গীত গাইলেন জেলার নেতা-নেত্রীরা। মাইক ছিল সদ্য নির্বাচিত কাউন্সিলর রিনা দাসের হাতে। আর তিনিই গেয়ে উঠলেন ভুল জাতীয় সঙ্গীত। সেই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই ভাইরাল। নেট নাগরিকদের ট্রোলের শিকার হলেন তৃণমূলের ওই নেত্রী।
পেট্রোল, ডিজেল, রান্নার গ্যাস ও সিংহভাগ ওষুধের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথির সাংগঠনিক জেলার যুব তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকে মঙ্গলবার কাঁথি শহরে সভা করে তৃণমূল। ভবতারিনী মন্দির প্রাঙ্গন থেকে এই প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয়। পরে শহর ঘুরে বড় ডাক ঘরের সামনে পথসভা করে তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মৎস্য মন্ত্রী অখিল গিরি, জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যান অভিজিৎ দাস, জেলা সাধারণ সম্পাদক তরুণ জানা ও যুব তৃণমূল জেলা সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি সহ কাঁথি পুরসভার কাউন্সিলর এবং জেলা নেতৃত্ব বৃন্দ। এই মঞ্চ থেকে একাধিক বিষয়ে কেন্দ্রীয় নীতির সমালোচনা করা হয়। আর সেই মঞ্চেই উঠল জাতীয় সঙ্গীত অবমাননা করার অভিযোগ।
সভা শেষে জাতীয় সঙ্গীত শুরু করেন রিনা দাস, সেই জাতীয় সঙ্গীত অজস্র ভুলে ভরা। বিজেপির জেলা সভাপতি সুদাম পন্ডিত এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘আজকের এই সভায় জাতীয় সঙ্গীতের অবমাননা করা হয়েছে, যা দণ্ডনীয় অপরাধ।’ রিনা দাস নামে এই কাউন্সিলর কাঁথির ৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী হয়েছেন এবার। শুধু তাই নয়, তিনি পেশায় একজন পার্শ্বশিক্ষক এবং কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিলও বটে। তাই তাঁর মুখ থেকে এই গান শোনার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে গিয়েছে সমালোচনা। তবে এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি রিনা দাস। ভুল করেছেন বুঝেই মঞ্চ থেকে নেমে চলে যান তিনি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে সেই ভিডিয়ো। কেউ বলছেন, ‘শেখার শেষ নেই। এই বয়সেও জাতীয় সঙ্গীত শেখা উচিৎ।’ আবার কেউ বলছেন, ‘জাতীয় সঙ্গীতটাও জানা নেই!’
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি জানিয়েছেন, এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। এটা অনিচ্ছাকৃত ভুল। একজন ভারতীয় হিসেবে জাতীয় সঙ্গীত অবমাননা কোনও ভাবেই মানা যায় না বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। সুপ্রকাশ গিরি বলেন, ‘উনি ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। মানুষ মাত্রেই ভুল হয়, তবুও একজন শিক্ষিকা হিসেবে সচেতন থাকা উচিত ছিল। জন প্রতিনিধিরা এমন বড় ভুল করলে কী করে চলবে! আগামিদিনে আমাদের আরও সজাগ থাকতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এমন ভুল কোনও দিন না হয়। আমরা ক্ষমা প্রার্থী জনগণের কাছে এই ভুলের জন্য।’
আরও পড়ুন : Bomb recovered in Birbhum: ‘একটা দেশ উড়ে যাবে’, ৪ দিনে ৪০০-র বেশি বোমা উদ্ধার বীরভূমে