কাঁথি: একটি প্রণাম। আর তার জেরেই মহা ফ্যাসাদে কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা সুবল মান্না। তাঁকে পদ ছাড়তে বলা হয়েছে দলের তরফে। তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ সাংবাদিক বৈঠকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন দলের অবস্থান। কিন্তু এসবের পরও, এখনও বহাল তবিয়তে কাঁথি পুরসভার পদ আগলে বসে রয়েছেন সুবল মান্না। গতকাল পুরসভায় নিজের অফিসে গিয়েছেন। কাজকর্ম, ফাইল-পত্রে সই-সাবুদ করেছেন। আজই গিয়েছেন অফিসে। দলীয় মুখপাত্র যখন সাংবাদিক বৈঠকে অবস্থান জানিয়ে দিচ্ছেন, তারপরও কীভাবে পদ আঁকড়ে বসে আছেন সুবলবাবু? কোন অদৃশ্য শক্তি রয়েছে এর নেপথ্যে? জোর চর্চা শুরু হয়েছে জেলার রাজনীতির অন্দরমহলে।
উল্লেখ্য, কাঁথি পুরসভার প্রশাসকের পদ থেকে সৌমেন্দু অধিকারীকে সরানোর পর, সেখানে সিদ্ধার্থ মাইতি ও হরিসাধন দাস অধিকারী প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব সামলান। এরপর পুরভোটে জিতে কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান হন সুবল মান্না। পেশায় ডেকরেটার ব্যবসায়ী সুবল মান্না কাঁথির রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত। শোনা যায়, সিপিএম, সোশালিস্ট, নির্দল, কংগ্রেস এবং তারপও পরে শিশির অধিকারীর হাত ধরে তৃণমূলে আসেন তিনি। অধিকারী পরিবারের সঙ্গেও তাঁর বেশ ঘনিষ্ঠতা ছিল বলে শোনা যায়। পরবর্তীতে অধিকারী পরিবারের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব তৈরি হলেও, সুবল মান্না তৃণমূলেই রয়ে গিয়েছেন।
সম্প্রতি এক অরাজনৈতিক অনুষ্ঠানে শিশিরবাবুর সঙ্গে এক ফ্রেমে দেখা গিয়েছে সুবলকে। শিশিরবাবুকে প্রণামও করেছেন সুবল। সেই ছবিও ভাইরাল হয়েছে। আর এরপরই দলের তরফে সুবলকে ইস্তফার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সূত্রের খবর, রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে গতরাতে সুবল মান্না ছাড়া ১৬ জন কাউন্সিলরকে নিয়ে গোপন বৈঠক করেছেন তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পীযূষ পণ্ডা। সূত্র বলছে, সেখানেই কাউন্সিলরদের অনাস্থা ইস্যুতে সই করে চিঠি পাঠানো হয়েছেল রাজ্য নেতৃত্বের কাছে।
সূত্র বলছে, ইতিমধ্যেই কলকাতায় গিয়ে দলীয় নেতাদের সঙ্গে দেখা করেছেন সুবল মান্না। নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন বলে জানা যাচ্ছে। অধিকারী পরিবারের প্রতি তাঁর কোনও দুর্বলতা নেই, সেকথাও জানিয়েছেন বলে সূত্রের দাবি। এদিকে বিষয়টি নিয়ে সুবল মান্নাকে আজ প্রশ্ন করা হলে তিনি এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, ‘এই ব্যাপারে আমি কিছু বলব না। দলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। আমি এখন কিচ্ছু বলব না।’