
নন্দীগ্রাম: অঞ্চল সভাপতির পদ গিয়েছে তৃণমূল নেতার। আর তারপর থেকেই জল বন্ধ গোটা গ্রামে। বিগত পনেরো দিনের বেশি সময় ধরে এই ছবিই দেখতে পাওয়া যাচ্ছে রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লকের আয়াস গ্রাম পানিসাইল গ্রামে। বীরভূমের রোগ এবার পূর্ব মেদিনীপুরেও। খানিক একই ছবি নন্দীগ্রামের তারা চাঁদবাড়ে। তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ানের জামাই শেখ হাবিবুল রহমানের বিরুদ্ধেও গ্রামে জল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ। তিনিই আবার গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান। অভিযোগ, পঞ্চায়েতে গ্রামবাসীদের অনেকে তৃণমূল ভোট দেয়নি বলেই নাকি জল বন্ধের ফতোয়া। বিক্ষোভে ফুঁসছে তারা চাঁদবাড়। অভিযোগ, মহম্মদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নিজে দাঁড়িয়ে থেকে জলের লাইন কেটে দিয়েছেন।
প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে এক গ্রামবাসী বলেন, “আমরা কী ভারতের নাগরিক নাকি অন্য কোনও জায়গার মানুষ? জল নিয়ে রাজনীতি কেন হচ্ছে? কে ভোট দিয়েছে, আর কে দেয়নি সেটা তাঁদের ব্যাপার।” যদিও সমস্ত অভিযোগই উড়িয়েছে তৃণমূল। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা শেখ হাবিবুল রহমান বলেন, সবই মিথ্য়া অভিযোগ। কে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে না দিয়েছে ওগুলো নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। যে সাবমার্শিবল থেকে জল আসতো ওটা একটা স্কুলের। এখানে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। নিয়ম অনুযায়ী থেকে সাবমার্শিবল যে জলের ট্যাপ করা রয়েছে সেখান থেকে প্রত্যেককে জল নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু ওই এলাকার কয়েকজন সাবমার্শিবল পাম্পে এক্সট্রা পাইপ লাগিয়ে ২০০ থেকে ৩০০ মিটার দূরত্ব পর্যন্ত নিজেদের বাড়িতে জল নিয়ে যাচ্ছে। তাতে সাবমার্শিবল পাম্পের ক্ষতি হচ্ছে। আর বাড়ি পর্যন্ত পাইপলাইন করে জল নিয়ে যাওয়াটা নিয়ম বহির্ভূত। তাই এদিন অতিরিক্ত পাইপগুলিকে কেটে দেওয়া হয়েছে।”
যদিও তাঁর কথায় পাত্তা দিতে নারাজ গ্রামবাসীরা। জলের দাবিতে শনিবার দীর্ঘক্ষণ এলাকায় চলে বিক্ষোভ। ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। শেষ পর্যন্ত খবর পেয়ে এলাকায় আসে নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ। অন্যদিকে বীরভূমের জল বন্ধের ঘটনায় কিন্তু, বিন্দুমাত্র আক্ষেপ নেই তৃণমূল নেতা আকবর আলমের গলায়। তাঁকেই দল বিরোধী কাজের জন্য সরানো হয়েছে পদ থেকে। সেই তিনিই বলছেন, “আমার পরিচয়ের সুবাদেই ও গ্রামে জল সরবরাহ হতো। এখন আমি নেই। সে কারণেই জল বন্ধ হয়েছে। গ্রামবাসীরা এবার খানিক কষ্ট পাক। তারপর আবার জল খাওয়ানো হবে।”