নন্দীগ্রাম: ব্যালট বাক্স লুঠ, ভোটদানে বাধা, অস্ত্র হাতে উন্মত্ত দাপাদাপি, বুথের সামনে চাপ চাপ রক্ত, এজেন্টদের ক্ষতবিক্ষত দেহ, বোমাবাজি, গুলি- হিংসার নিরিখে এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচন কি অতীতের রেকর্ড ভাঙল? নির্বাচনের প্রথমার্ধের মধ্যেই খুন হয়েছেন ১১ জন। পঞ্চায়েত নির্বাচন চলাকালীনই ‘কালীঘাট চলো’, গণ অভ্যুত্থানের ডাক দিলেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সঙ্গে এটাও বললেন, হাতে পতাকা থাকুক কিংবা নাই থাকুক, গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে লড়াই চালবেন। বিরোধী দলনেতার এহেন মন্তব্যের নেপথ্যে কী সুপ্ত কোনও বক্তব্য? তা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়ে গিয়েছে জলঘোলা।
নন্দীগ্রামের নন্দনায়ক বাড়ের ৭৭ নম্বর বুথে ভোট দেন শুভেন্দু অধিকারী। বুথের অদূরে তিনি সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানেই তিনি বলেন, “দুটি পথ খোলা রয়েছে এখন। চলো কালীঘাট। ইটগুলো খুলি। ১০-১২টা মানুষ মরবে, তাতে আমি থাকতে রাজি আছি। কিন্তু বাকি ১০ কোটি বেঁচে যাবে। আর দ্বিতীয়ত ৩৫৬ কিংবা ৩৫৫ ধারা।”
এই প্রসঙ্গে বলতে গিয়েই শুভেন্দু বলেন, “দিল্লির কে কী ভাববে, অন্য কে কী বলবে, আমার জানার দরকার নেই। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে বাংলাকে পরিত্রাণ দেওয়ার জন্য মন্ত্রিত্ব ছেড়ে এখানে এসেছি। আমি একটা কারণে, একটা লক্ষ্য নিয়ে এসেছি। সেই লক্ষ্যে আমাকে যা করতে হয় করব। পতাকা ধরে কিংবা পতাকা ছেড়ে, টু সেভ ডেমোক্রেসি আমাকে যা করতে হয় করব।”
দেদার ছাপ্পা, পোলিং অফিসার, প্রিসাইডিং অফিসাররা অসহায়- পঞ্চায়েত নির্বাচনের হিংসার বিভিন্ন তথ্য এদিন সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন শুভেন্দু। বিরোধী দলনেতা আরও হুঁশিয়ারি দেন, “অবৈধ নির্বাচন। অবৈধ পঞ্চায়েতের ভোট হবে। ট্যাক্সের টাকা এই অবৈধভাবে জেতা পঞ্চায়েতকে দিতে দেব না। একশো দিনের কাজের টাকা বন্ধ রয়েছে। কেবল আবাসের টাকা পায়, সেটা বন্ধ করব। মিড ডে মিলের নির্দেশিকা এসে গিয়েছে। বিডিও, ডিএম-রা জেলে যাবেন।”
পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে হিংসার ঘটনা ঘটছে, তার তথ্য় মানুষকেই সংগ্রহ করতে বলেছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, “মানুষকে বলব যা ঘটছে, সব তথ্য সংগ্রহ করুন। কারণ আদালতের পর্যবেক্ষণে ভোট হচ্ছে। আদালতে বলেছিল, সিভিক ভলান্টিয়র ব্যবহার করতে না, কিন্তু সেটা হচ্ছে। কোর্ট বলেছিল সিসিটিভি মনিটারিং করতে, যেখানে সিসিটিভি পাওয়া যাবে, ভিডিয়োগ্রাফি করতে, কিন্তু তা হয়নি। আদালত বলেছিল, আনুপাতিক হারে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখতে হবে, সেটাও হয়নি।” তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কোথাও দেখতে পারবেন না। বাহিনীকে গ্যারেজ করে রেখে দিয়েছে।”