পূর্ব মেদিনীপুর: সিকিমে (Sikkim) ঘুরতে গিয়েছিলেন রামনগরের যুবক। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সেই যুবকের বরফ-কঠিন দেহ ফিরল রামনগরের (Ramnagar) বাড়িতে। সিকিমের তুষার ঝড়ে প্রাণ হারিয়েছেন রামনগর-১ ব্লকের বসন্তপুরের সাগরেশ্বর মুকুন্দপুরের যুবক প্রীতম মাইতি (৩৭)। বরফের টানে বিপদের মুখে ছুটে গিয়েই কি এমন ভয়ঙ্কর পরিণতি হল, উঠছে সে প্রশ্নও। এদিন রাতেই রামনগরে ওই যুবকের বাড়িতে যান কারামন্ত্রী অখিল গিরি। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে প্রথমে বিমান ও পরে গাড়ি করে মৃতদেহ এসে পৌঁছয় পূর্ব মেদিনীপুরের বাড়িতে। দেহ আসার আগে থেকেই এলাকায় মানুষের ভিড়। সকলেরই চোখ ছলছল।
এই গ্রামেই বড় হয়েছেন প্রীতম। এরপর কাজের সূত্রে কলকাতায় যাওয়া। মানিকতলায় স্ত্রী, ছেলেকে নিয়ে ছোট্ট সংসার। গ্রামের বাড়িতে থাকেন মা-বাবা। প্রীতমরা এক ভাই, এক বোন। ছেলেকে হারিয়ে রামনগরের ৬৪ বছরের পূর্ণচন্দ্র মাইতির বাড়িতে বিষাদের ছায়া। এই বয়সে সন্তানকে হারিয়ে মা জ্যোৎস্না মাইতির (৫৮) দু’চোখে অপার শূন্যতা।
রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের ঠিকাদার পদে কাজ করতেন প্রীতম। কলকাতার মানিকতলায় বাগমারি লেনের একটি বেসরকারি আবাসনে স্ত্রী শিউলি মাইতি ও পাঁচ বছরের ছেলেকে নিয়ে থাকতেন। প্রীতমের মৃত্য়ুসংবাদ আসার পর তাঁদেরও গ্রামের বাড়িতেই নিয়ে আসা হয়। বৃহস্পতিবার প্রীতমের কফিনবন্দি দেহ বাড়ি ঢুকতেই বাড়ি থেকে কান্নার রোল ওঠে। ২৭ বছরের শিউলি স্বামীকে হারিয়ে দিশাহারা।
মুখ্যমন্ত্রী দিঘা থেকে ফেরার পথে বিধায়ক ও মন্ত্রী অখিল গিরিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন শোকার্ত পরিবারের পাশে থাকার জন্য। সেইমতোই এদিন মাইতি পরিবারের পাশে এসে দাঁড়ান এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরি। তিনি বলেন, ছেলের এভাবে চলে যাওয়া কোনও বাবা-মায়ের পক্ষেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। তাঁরা শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন। রাজ্য সরকার এই পরিবারের পাশে সবরকমভাবে আছে।
গত শুক্রবার রামনগরের বাড়িতে গিয়েছিলেন প্রীতম। বাড়িতে পুুজো ছিল। শনিবার কলকাতায় ফেরেন। রবিবার রওনা দেন সিকিমে। সাত সদস্যর টিমে সিকিমে গিয়েছিলেন তিনি। তুষারপাত হচ্ছে শুনে বরফ দেখতে ছোটেন বলে সূত্রের খবর। এরপরই ভয়াবহ তুষারধস। সপ্তাহ ঘোরার আগেই সেই রামনগরের বাড়িতে ফিরলেন, কাঁধে চেপে।