কাঁথি: রাজ্য়ে কয়েকদিন আগেই শেষ হয়েছে পুরসভার ভোট। নদিয়ার তাহেরপুর ও দার্জিলিং বাদ দিয়ে সব কটি পুরসভা ইতিমধ্যে দখলে নিয়েছে তৃণমূল। এর আগে চার পুরনিগমও সবুজ শিবিরের হাতে চলে গিয়েছিল। এবার এই পুরনির্বাচনে সব থেকে বেশি নজর ছিল যে পৌরসভা নিয়ে ছিল তা হল কাঁথি। অধিকারী গড়ে ঘাসফুল ফোটায় এখন তা বাংলার রাজনীতির আলোচনার বিষয়।
তবে কে চেয়ারম্যান হবেন কাঁথি পুরসভার? এই নিয়ে ইতিমধ্যে জোড় গুঞ্জন শুরু হয়ে গিয়েছে। ২০০৯ পরবর্তী শিশির অধিকারীর যোগ্য উত্তরসুরী খুঁজতে রীতিমত হিমশিম খেয়েছে রাজনৈতিক মহল। পুরনির্বাচনে শান্তিকুঞ্জের সদস্যদের রাজনীতিগত ভাবে পরাজয় নিশ্চিত হয়েছে বটে। তবে শাসকদল তৃণমূলেরও দীর্ঘ দশ বছরে শিশির পরবর্তী একজন যোগ্য উত্তরসুরী খুঁজে উঠতে পারেনি। অন্তত এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। সেই কারণে পৌর রূপকারের আসনে যোগ্য ব্যক্তির অভাব ঘটেছে।
নির্বাচনে দলীয় টিকিট পাওয়া বা পছন্দমতো প্রার্থী না হওয়াতে ডানপন্থী মত বিরোধের সংস্কৃতী দেখছে বাংলা ।আবারও সেই ছবির পুনরাবৃত্তি হবে না তো কাঁথিতে? এই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বস্তুত, কাঁথির পৌর নির্বাচনে তৃণমূল ১৭,বিজেপি-৩, ও নির্দল ১ কাউন্সিলর রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে পুরসভার চেয়ারম্যান দৌড়ে এগিয়ে মন্ত্রী পুত্র যুব নেতা সুপ্রকাশ গিরি। শিক্ষক নিরঞ্জন মান্না, তনুশ্রী চক্রবর্তী(ভট্টাচার্য)ও পম্পা মাইতি(জানা),সুবল মান্না। আর ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে গুঞ্জন রয়েছে শঙ্কর লাল দাস,দেবাশীষ পাহাড়ি, আলেম আলী খাঁন, অতনু গিরি সহ একাধিক নাম।
সূত্রের খবর, আবারও পুর টিকিট বণ্টনের মতোই দলের অন্দরে একে-অপরকে টেক্কা দিয়ে নিয়ে নিজের কাছের লোক বসানোর কৌশল চলছে নিপুন ভাবেই। তবে সেই কৌশলে রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্ব কতটা সায় দেয় সেটাই দেখার অপেক্ষা। প্রসঙ্গত, পূর্ব মেদিনীপুরে কান পাতলে এখন অন্য কথা শোনা যায়। রাজনৈতিক মহল বলছে, দিলীপ ঘোষের এগরা তাও মান রেখেছে। কিন্তু কাঁথি, তমলুকে পদ্ম পাঁপড়িই মেলতে পারল না। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি, এগরা ও তমলুক পুরসভা নিজেদের দখলে রেখেছে তৃণমূল। গত বিধানসভা ভোটের নিরিখে তিন পুরসভাতেই এগিয়ে থেকে লড়াইয়ে নেমেছিল বিজেপি। কিন্তু পুরভোটের ফলাফলে তৃণমূলের ধারে কাছে নেই পদ্মশিবির। অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ কাঁথি, তমলুকে তৃণমূলের জয়জয়কার। কারণ, এতদিন এই এলাকাগুলিকে বলা হত অধিকারীদের গড়। বিশেষ করে কাঁথি। এখান থেকেই শিশির অধিকারী, শুভেন্দু অধিকারীদের রাজনৈতিক জীবনের শুরু। দাপটের সঙ্গে এতগুলো বছর ধরে রাজনীতিও করছেন তাঁরা। কিন্তু আচমকাই এই কাঁথিতে এদিন নতুন অধ্যায় লিখল গিরিরা।