পুরুলিয়া: কংগ্রেস কাউন্সিলর খুনের রেশ এখনও কাটেনি। এরই মধ্যে ঝালদায় পুরবোর্ড গঠন হচ্ছে মঙ্গলবার। এদিন পুরুলিয়ার ঝালদা পৌরসভায় বোর্ড গঠন। মহকুমা শাসক বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া পরিচালনা করছেন। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচনও হবে আজ। মোট ১২ আসনের পুরসভায় কংগ্রেসের দখলে ছিল ৫টি আসন। তপন কান্দু খুন হওয়ায় কংগ্রেসের হাতে এখনও চার জন কাউন্সিলর। আর তৃণমূলের কাউন্সিলরের সংখ্যা পাঁচ। নির্দল কাউন্সিলর রয়েছেন ২ জন। কংগ্রেস জানিয়ে দিয়েছে, তপন খুনের প্রতিবাদে তাঁরা বোর্ড গঠনের ভোটাভুটিতে অংশ নেবেন না। বোর্ড গঠনে তাঁরা বাধাও দেবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। আজকের দিনটিকে তাঁরা কালা দিবস হিসাবে পালন করছেন। কালো ব্যাজ পরে শহরে মিছিলও করবে কংগ্রেস। তৃণমূলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পুরসভার প্রশাসনিক জটিলতা কাটাতে বোর্ড গঠন জরুরি।
কংগ্রেসের জেলা সভাপতি নেপাল মাহাতো বলেন, “আমরা গণতান্ত্রিক উপায়ে প্রতিবাদ করব। এটা একটা ঐতিহাসিক দিন। যেখানে দেখা যাচ্ছে এক জন কাউন্সিলরকে হত্যা করে বোর্ড গঠনের প্রচেষ্টা স্বার্থক হল।”
অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, “কংগ্রেস এটা নিয়ে রাজনীতি করছে, সেটা অন্য বিষয়। আমাদের সংখ্যা ৬ ছিল। কংগ্রেসের সংখ্যা ছিল ৫, নির্দল এক। সেদিকে থেকে আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ দল ছিলাম প্রথম থেকেই। সেই হিসাবে বোর্ড গঠনের দাবি আমরা প্রথম থেকেই করছিলাম।” এক্ষেত্রে বলে রাখা প্রয়োজন, তৃণমূলের পাঁচ কাউন্সিলরই ভোটে জয়ী হন। বাকি দুজন নির্দল হিসাবে লড়েন, তাঁরা জেতেন। ফল ঘোষণার দিনই এক নির্দল কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেন। সেদিক থেকে বিচার করলে তৃণমূলের কাউন্সিলরের সংখ্যা ৬।
তপন কান্দু খুনের ঘটনায় বোর্ড গঠনের আগেও উঠে আসে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য়। প্রকাশ্যে আসে বিস্ফোরক এক অডিয়ো ক্লিপ। সেখানে শোনা যায়, তপন কান্দুকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ তৈরি করা হচ্ছিল। ওই অডিয়ো ক্লিপে শোনা যাচ্ছে, তপন কান্দুর সঙ্গে টাকা দেওয়ার বিষয়ে কথা হচ্ছে। পরে ওই অমল শাসানি দিয়ে বলেছেন, ‘মাথা খারাপ করিস না। তৃণমূলে তো তোকে আসতেই হবে।’ পরিবারের অভিযোগ, তৃণমূলে না যেতে চাওয়াতেই খুন হতে হয়েছে তাঁকে। যদিও এই অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি TV9 বাংলা।
এখনও পর্যন্ত তপন কান্দু খুনে আরও একটি তথ্য উঠে এসেছে। সেটি রাজনীতির পাশাপাশি পারিবারিকও বটে। খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন তাঁর দাদা নরেন কান্দু ও ভাইপো মিঠুন কান্দুকে। জানা যায়, পুরসভা নির্বাচনে আগে দাদার সঙ্গে বেট লড়েছিলেন তপন কান্দু। হেরে গিয়ে বেটের টাকা দিতে হয় তপনের দাদাকে। তার কিছুদিন পরেই খুন হন তপন। এখনও এই ঘটনায় জাল গোটাননি তদন্তকারীরা।