
পুরুলিয়া: বোতল কুড়োন, তারপর তা বিক্রি করেন। এই ভাবেই অভাব-অনটনের মধ্যে কাটছিল সংসার। কিন্তু তার মধ্যেই ঘটে গেল মর্মান্তিক ঘটনা। ট্রেনের মধ্যেই মৃত্যু হল মহিলার। অভিযোগ,মৃত্যুর পর দীর্ঘ ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তাঁর দেহ স্টেশনে পড়ে থাকলেও রেল কর্তৃপক্ষ কোনও উদ্যোগ নেয়নি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার। উল্টে মহিলার স্বামীকে দেহ সরিয়ে নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার সকালে দক্ষিণ পূর্ব রেলের আদ্রা–চান্ডিল শাখার বরাভূম রেলস্টেশনে।
এর আগে বাংলা দেখেছে অসুস্থ রোগীকে কখনও দোলায় নিয়ে যেতে, কখনও আবার কাঁধে করে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে। আর এবার স্ত্রীর মৃতদেহ স্টেশনে আগলে বসে থাকলেন স্বামী। অভিযোগ, এল না কোনও সাহায্য। ঠায় প্ল্যাটফর্মে বসে থাকলেন স্বামী। আর পাশে পড়ে রইল স্ত্রীর দেহ।
মৃতার স্বামী মনোজ কর্মকার জানান, তাঁরা ঝাড়খণ্ডের কাঁন্দ্রা স্টেশন থেকে গোমো ট্রেনে ফিরছিলেন। পথে স্ত্রী শান্তা কর্মকার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। এরপর তাঁকে বরাভূম স্টেশনে নামানো হয়। তবে আর বাঁচানো যায়নি। বরাভূমে মৃত্যু হয় তাঁর। তিনি বলেন, “আমার স্ত্রী মারা গিয়েছে। আচমকা অসুস্থ হয়ে মারা গেছে। রেলের কেউই এল না।”
স্থানীয়দের ক্ষোভ, দীর্ঘক্ষণ দেহ পড়ে থাকলেও রেলের পক্ষ থেকে কোনও চিকিৎসা বা সহযোগিতা মেলেনি। ঘটনায় দায়িত্ব এড়াতে চান স্টেশন ম্যানেজারও।তিনি কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
পুরুলিয়া জিআরপি সূত্রে খবর, মৃত দম্পতি পুরোনো বোতল কুড়িয়ে সেই বোতল বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। জিআরপি দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পুরুলিয়ায় পাঠিয়েছে। মঙ্গলবার রিপোর্ট এলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।