শ্যামপুর: মেয়ের শ্লীলতাহানি (Shyampur Molestation Case) রুখতে গিয়ে মদ্যপ যুবকদের হাতে খুন হয়েছিলেন বাবা। কয়েকদিন আগে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটে গিয়েছিল উলুবেড়িয়ার শ্যামপুরে। মঙ্গলবারই মৃত ব্যক্তির দেহ আটকে বিক্ষোভ দেখাতে দেখা গিয়েছিল স্থানীয়দের। বুধবারও উত্তপ্ত গোটা এলাকা। এরইমধ্যে তিনজন দুষ্কতীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যদিও তারপরেও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও। এদিন সকাল থেকেই পথে নেমেছে বামেরা, পথে নেমেছে কংগ্রেস-বিজেপি (Congress-BJP)। এদিন বিকালে বিজেপির (BJP) কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। এদিন বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে শ্যামপুর থানায় আসেন গ্রামবাসীরাও। পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে উঠতে থাকে লাগাতার স্লোগান।
থানার ব্যারিকেড ভেঙে ঢোকার চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশের সঙ্গে তাঁদের ব্যাপক ধস্তাধস্তিও শুরু হয়ে যায়। গোটা বিক্ষোভ কর্মসূচির নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় বিজেপি জেলাস্তরের নেতাদের। তবে যে সময় মূল বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল তখন লোকবল বেশি না থাকলেও খানিক পরেই কাতারে কাতারে মানুষ যোগ দিতে শুরু করেন এদিনের কর্মসূচিতে। অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। প্রসঙ্গত, গত রবিবার টিউশন থেকে ফিরছিলেন শ্যামপুরের দশম শ্রেণির এক কিশোরী। বাড়ির কাছে আসতেই তার পথ আটকায় এলাকার কিছু যুবক। তাঁরা প্রত্যেকেই মদ্যপ ছিল বলে জানা যাচ্ছে। কিশোরীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। মেয়ের চিৎকার শুনে ছুটে আসেন বাবা। বাধা পেয়ে ওই ব্যক্তিকে মাঠে ফেলে বেধড়ক মারধর শুরু মদ্যপ যুবকের দল। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ওই ব্যক্তিকে। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
ঘটনার পরেই অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবিতে সরব হয়েছেন নির্যাতিতা। একইসঙ্গে প্রশাসনের কাছে তাঁদের সংসারের ভরনপোষণ নেওয়ারও দাবি করেছেন। ঘটনা প্রসঙ্গে মৃত ব্যক্তির স্ত্রী বলেন, “আমার মেয়ে পড়ে বাড়ি আসছিল। তখনই আমার মেয়ের পথ আটকায় ওরা। আমার স্বামী রোজই ওকে আনতে যায়। সেদিন মাঠে গিয়েছিল পাশেই। মেয়ের চিৎকার শুনতে পেয়েই ওই জায়গায় আসেন। ঘটনার প্রতিবাদ করেন। কোনওমতে তখন আমার মেয়ে ঘরে চলে আসে। এদিকে ততক্ষণে আমার স্বামীকে মাঠে ফেলে বেধড়ক মারধর শুরু করে দিয়েছিল ওরা। তাতেই এই পরিণতি।” মঙ্গলবার শ্যামপুরে মৃত ব্যক্তির দেহ নিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের বিক্ষোভে সামিল হতে দেখা গিয়েছিল। তাঁদের অভিযোগ, বিগত কয়েকমাসে এলাকায় মদের বিক্রি অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। সে কারণেই আরও বেড়েছে অসামাজিক কাজ।