
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ওদের তুলে নিয়ে গেল বঙ্গোপসাগর থেকে। মাছ ধরার সময় ‘ভুলবশত’ পেরিয়ে গিয়েছিল সীমানা। এখন গুনতে হচ্ছে সেই ভুলেরই মাশুল। আটকে রয়েছে বাংলাদেশে।
ঘটনার রবিবারের। সেদিন রাতে বাংলাদেশের মোংলা বন্দরের ফেয়ারওয়ে বয়া থেকে ৭৭ নটিক্যাল মাইল দূরে বঙ্গোপসাগর থেকে দু’টি ভারতীয় ট্রলার ও মৎস্যজীবীদের আটক করেছে বাংলাদেশের নৌবাহিনী। এ পারের মৎস্যজীবী সংগঠনের মারফৎ জানা গিয়েছে, ওই দুই ট্রলার-সহ মোট ৩৪ জন মৎস্যজীবীকে সেদিন রাতে বাংলাদেশে পাকড়াও করে নিয়ে গিয়েছে তাদের নৌসেনা। এছাড়াও, বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে সঙ্গে থাকা যাবতীয় সামগ্রীও।
বাংলাদেশে আটক হওয়া ভারতীয় মৎস্যজীবীদের প্রত্যেকেই দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সুন্দরবন এলাকার বাসিন্দা। পেটের দায়ে সমুুদ্রে নেমেই কাজ তাদের। কিন্তু সেখানেও পাতা রয়েছে বিপত্তির ফাঁদ। কিন্তু কেনই বা গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের? কোন ভুলের সীমানা পেরিয়ে গিয়েছিল তারা? মৎস্যজীবীদের সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, একে মাঝ সমুদ্র রাতে ঘুটঘুটে অন্ধকার। আর তার উপর আবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এই দুই মিলমিশের কারণেই সেদিন পথভ্রষ্ট হয়ে পড়েন মৎস্য়জীবীরা। ভুলবশতই ভারতীয় জলসীমা পেরিয়ে ঢুকে পড়েন বাংলাদেশের সীমানার অন্দরে।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই বাজেয়াপ্ত হওয়া দু’টি ট্রলারকে বাংলাদেশের মোংলা থানার হাতে তুলে দিয়েছে তাদেরই নৌসেনা, এমনটাই খবর। আটকদের রেহাই দেওয়ার জন্য প্রশাসনিক স্তরে যোগাযোগ করছে মৎস্যজীবী সংগঠনের কর্মকর্তারা। কিন্তু কতটা ফলপ্রসূ হবে তাদের এই চেষ্টা সেই ধন্দ তো রয়েছেই।
এই ধরণের ঘটনায় একটি বিষয় বরাবরই স্পষ্ট অন্য দেশে গিয়ে আটক হলে ছাড়া পেতে জীবন কাহিল হয়ে যায়। ভারতের পড়শি দেশ অর্থাৎ যারা জলসীমানার মধ্যে রয়েছে, সেগুলি হল শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। আর তিন দেশের সীমানার-ফাঁদে প্রায় প্রতি বছরই পড়ে থাকেন বহু মৎস্যজীবীরা। যাদের পেট চালানোর উপাদানটাই রয়েছে জলে, তারা ফাঁপড়ে পড়েন এই জলে নেমেই। চলতি বছরেই প্রধানমন্ত্রী যখন শ্রীলঙ্কা যান, সেই সময় নিজে সেখানে আটক বহু ভারতীয় মৎস্যজীবীদের ছেড়ে দেওয়ার আর্জি করেন। মোদীর কথা শোনে দ্বীপরাষ্ট্র। ছেড়ে দেওয়া হয় অনেককে। কিন্তু এখনও যে আটক রয়েছেন অনেকে। আর এই ছবি একইরকম বাংলাদেশ ও পাকিস্তানেও। এই দুই দেশের কারগারেও বন্দি কত না নির্দোষ ভারতীয় মৎস্যজীবী।়