
রায়দিঘি: পঞ্চায়েত ভোট মিটেছে দু’মাসেরও বেশি হয়েছে। কিন্তু রেশ এখনও কাটেনি। সরকারি পাট্টা জমিতে বসবাসকারী ৫টি পরিবারের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিজেপিকে ভোট দেওয়াতেই তাঁরা নিগৃহীত বলে অভিযোগ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘির কঙ্কণদিঘি গ্রাম পঞ্চায়েতের মুণ্ডাপাড়ার এই ঘটনায় রাজনৈতিক উত্তাপ। গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে ৫টি বিজেপি পরিবারের সদস্য বাড়ি থেকে বের হতে গলা সমান জল দিয়ে যাতায়াত করছেন। কার্যত দশ দিন ধরে গৃহবন্দি ওই পরিবারগুলি। অনেকেই আবার বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র ঠাঁই নিয়েছে।
ইতিমধ্যে পরিবারগুলির তরফে মথুরাপুর দু’নম্বর ব্লকের বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। গতকাল ওই এলাকায় আসেন বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্র পাল-সহ মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্ব। দুর্গত পরিবারগুলির সঙ্গে কথা বলেন। পরে রায়দিঘি থানায় গিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন। দ্রুত যাতায়াতের রাস্তা না হলে রায়দিঘির সব রাস্তা বন্ধ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অগ্নিমিত্রা। স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য সুমন মাইতি রাস্তা বন্ধের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। রাস্তার বিষয়ে বিডিও ও পুলিশ ব্যবস্থা নেবেন বলে তিনি জানান।
ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসক অঞ্জন ঘোষ জানিয়েছেন, বিডিও ওই পরিবারগুলির সঙ্গে বৈঠক করে দ্রুত যাতায়াতের রাস্তার ব্যবস্থা করবে। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণের জন্য বেশ কিছু পরিবারকে স্থানান্তরিত করতে হয়। সেই পরিবারগুলিকে পরে পাট্টা দেওয়া হয়। সরকারিভাবে বাড়িও তৈরি করে দেওয়া হয়। কিন্তু প্রথম থেকে যাতায়াতের রাস্তার সমস্যা ছিল।
বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, “আমি পুলিশকে বলে গিয়েছি। তিন চার দিনের মধ্যে ব্যবস্থা করতে। বয়স্ক মানুষ, কোলে ছোটো ছোটো বাচ্চা নিয়ে তাঁরা রাস্তায় রয়েছেন। খাস জমি দখল করার জন্য সাঁকো ভেঙে দিয়েছে। আমরা তৃণমূলকে বিরক্ত করি না। তৃণমূলও যেন আমাদের কর্মীদের বিরক্ত না করে।”
তৃণমূল নেতা তথা মথুরাপুর দু’নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য সুমন মাইতি বলেন, “এটা ঠিক নয়। সরকারই ওদের জায়গাগুলি পাট্টা দিয়েছিল। সরকার এখন ২ লক্ষ টাকার মতো করে দিয়েছে। নিশ্চিতভাবে তাঁরা যেন রাস্তায় বেরোতে পারে, তা পঞ্চায়েত সমিতি, বিডিও-র তরফে দেখা হবে। ওরা কারোর কথা না শুনে কোনও পরিকল্পনা না করে ঘর বানিয়েছে। তাই এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। তবে ৬টা পরিবার থাকবে, তাঁরা রাস্তায় বেরোতে পারবেন না, সেটা তো হতে পারে না। সেটা নিশ্চিতভাবে প্রশাসনের তরফে দেখা হবে।”