মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পাশ নয়, এই চাকরি পেতে গেলে যোগ্যতা লাগে ‘টিএমসিপি’! MLA বলছেন, ‘ওরা অভাবী’

TMCP: ২০২৩ সালে কলেজের প্রাক্তন ছাত্র তথা এবিভিপি নেতা নিপুন দাস এই বিষয়ে কথা বলায়, তাঁকে ইউনিয়নরুমে ঢুকিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ। সেই সময় কাকদ্বীপ থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন নিপুন। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি।

মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পাশ নয়, এই চাকরি পেতে গেলে যোগ্যতা লাগে টিএমসিপি! MLA বলছেন, ওরা অভাবী
কাকদ্বীপ কলেজImage Credit source: TV9 Bangla

| Edited By: তন্নিষ্ঠা ভাণ্ডারী

Jul 05, 2025 | 9:35 AM

কাকদ্বীপ: নির্বাচন ছাড়াই কলেজের ইউনিয়ন রুমে ‘দাদাগিরি’ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে একাধিক। কসবাই হোক বা কাকদ্বীপ- ছবিটা একই। আরও অভিযোগ হল, শুধু ‘দাদাগিরি’ দেখানোই নয়, তৃণমূলের ছাত্র নেতা হলে জুটে যায় চাকরিও! বিশেষ করে কলেজে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে চাকরি পাওয়াটা তো খুবই সহজ। বছরের পর বছর শুধুমাত্র তৃণমূলের সদস্য হওয়ার সুবাদে চাকরি করে যাচ্ছেন অনেকে। এমনই অভিযোগ উঠছে কাকদ্বীপ কলেজ থেকে।

কাকদ্বীপ কলেজে চাকরি করেন এমন ৭ জন অস্থায়ী কর্মী, যারা টিএমসিপি-র নেতা-কর্মী বলেই পরিচিত। জানা গিয়েছে ‘গভর্নিং বডি’র সিদ্ধান্তেই মিলেছে ওই চাকরি। ২০২৩ সালে এবিভিপির ছাত্রনেতা এই নিয়ে প্রতিবাদ করায়, তাঁকে ইউনিয়নরুমে ঢুকিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তবে এই নিয়োগের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন এলাকার বিধায়ক থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

প্রায় এক দশক হতে চলল, কোনও নির্বাচন হয়নি কাকদ্বীপ কলেজে। ছাত্রদের দাবি, কলেজের দাপুটে ছাত্রনেতারাই পরবর্তীকালে কলেজে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে যোগ দিয়েছেন। এই নিয়োগের জন্য কোনও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়নি, কোনও পরীক্ওষা নেওয়া হয়নি। ২০২২ সাল থেকে ওই সাত জন কাকদ্বীপ কলেজে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করছেন বলে অভিযোগ। ‘যোগ্যতা’- টিএমসিপি নেতা-‌কর্মী।

কলেজের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান তথা স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরা এই নিয়োগের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। বিধায়কের দাবি, ন্যাকের (NAAC) মূল্যায়নের জন্য গভর্নিং বডি এই নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ‘এরা প্রত্যেকেই অভাবী বাড়ির ছেলে’ বলেও জানিয়েছেন বিধায়ক।

এই নিয়োগের বিরোধিতা করা হয় অনেক আগেই। ২০২৩ সালে কলেজের প্রাক্তন ছাত্র তথা এবিভিপি নেতা নিপুন দাস এই বিষয়ে কথা বলায়, তাঁকে ইউনিয়নরুমে ঢুকিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ। সেই সময় কাকদ্বীপ থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন নিপুন। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ সিসিটিভি-র ফুটেজ না দেওয়ায় পুলিশের তদন্ত আর এগোয়নি।

এই ৭ চাকরিপ্রাপকের মধ্যে অন্যতম তৌসিফ সর্দার। তিনি যে টিএমসিসিপি নেতা, সে কথা স্পষ্টভাবেই জানিয়েছেন তিনি। এমনই ৭ জন চাকরি করছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলার টিএমসিপি সভাপতি দেবাশিস দাস এবং মথুরাপুরের সাংসদের সঙ্গে ছবি ভাইরাল হয়েছে কলেজের অস্থায়ী কর্মীদের অনেকেরই। তাহলে এই অস্থায়ী কর্মীদের নিয়োগের পিছনে কি কারও হাত ছিল? এই প্রশ্ন ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।

কাকদ্বীপ কলেজের অধ্যক্ষ শুভঙ্কর চক্রবর্তী জানিয়েছেন, তিনি এই কলেজে যোগ দেওয়ার আগেই গভর্নিং বডি এই নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়। ন্যাকের মূল্যায়নের জন্য প্রয়োজনমাফিক এই অস্থায়ী কর্মীদের নিয়োগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে টিএমসিপির জেলা সভাপতি দেবাশিস দাস জানাচ্ছে, তিনি এই নিয়োগের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না।