
কাকদ্বীপ: আবারও বিতর্কে কাকদ্বীপের সুন্দরবন মহাবিদ্যালয়। এবার কলেজের ছাত্র সংসদের ভেতর ম্যাসাজ নেওয়ার অভিযোগ উঠল। ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। তৃণমূল ছাত্র পরিষদকে তোপ দেগেছে বিরোধীরা ছাত্র সংগঠনগুলি। তবে যুক্তি দিয়েছে টিএমসিপি। আবার কলেজের অধ্যক্ষ স্বীকার করলেন, কলেজের মাঠে বহিরাগতরা খেলতে আসেন। এমনকি, সেইসময় ইউনিয়ন রুমেও তাঁদের দেখা যায়।
ভাইরাল ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, কলেজের ইউনিয়ন রুমে একজনকে ম্যাসাজ করে দিচ্ছেন এক যুবক। ওই যুবকের নাম দেবজ্যোতি পাল বলে জানা যায়। ভিডিয়োটি ভাইরাল হতেই শোরগোল পড়েছে। স্থানীয় বিধায়কের প্রশয়ের বহিরাগতরা কলেজে ঢোকেন বলে অভিযোগ।
এই নিয়ে এবিভিপি নেতা নিপুণ নেতা বলেন, “আর কত কী দেখতে হবে। তৃণমূল দায় এড়াতে পারে না। প্রিন্সিপ্যালও দায় এড়াতে পারেন না। বহিরাগতরা যে ইউনিয়ন রুমে ঢোকে, এটা প্রিন্সিপ্যালও জানেন। প্রিন্সিপ্যালের চাকরি হারানোর ভয় রয়েছে।” ইউনিয়ন রুমে বিছানা কোথা থেকে এল, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি।
তৃণমূলকে খোঁচা দিয়ে ডিওয়াইএফআই নেতা স্বপ্নময় সাহা বলেন, “কাকদ্বীপের যিনি বিধায়ক রয়েছেন, সবই তাঁর অনুপ্রেরণায় হচ্ছে। কাকদ্বীপ কলেজে এখন বিয়েবাড়ি হচ্ছে। ম্যাসাজ পার্লার হচ্ছে। আসলে কলেজ থেকে পড়াশোনাটা তুলে দিতে চাইছে।”
বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা সৌম্যদীপ গায়েন বলেন, “ভিডিয়োতে যাঁকে দেখা যাচ্ছে, তিনি আমাদের কলেজের ছাত্র নন। কলেজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর তাঁরা ওখানে ফুটবল খেলতে আসে। শোনা যাচ্ছে যে, খেলার সময় কারও লেগে গিয়েছিল। সেজন্যই গা টিপে দিচ্ছিল বা এরকম ব্যাপার।”
বহিরাগতরা ইউনিয়ন রুমে ঢোকেন বলে কার্যত স্বীকার করে কলেজের অধ্যক্ষ শুভঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের কলেজের মাঠ অনেকটা বড়। ওখানে কলেজের ছেলেরা যেমন খেলে, তেমনই স্থানীয় ছেলেরাও খেলে। কলেজের ইউনিয়ন রুমটা খোলা থাকে। ওরা অনেকসময় সেখানে পোশাক বদলায়। কারও হয়তো খেলতে খেলতে ব্যথা লেগেছে, সেইজন্য একাজ করেছে। সেটা আমি ১০০ শতাংশ নিশ্চিত নয়। তবে হলেও হতে পারে।” ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কলেজের নিরাপত্তা নিয়ে পরিচালন সমিতির বৈঠক ডাকা হয়েছে।
অন্যদিকে, দেবজ্যোতি পাল নামে ওই যুবক বলেন, “আমি কলেজ ছাত্র নই। ঘটনাটি তিন বছরের পুরনো। আমরা বিকেলে মাঠে খেলতে যেতাম। ওর লেগে গিয়েছিল। সেইসময় বৃষ্টিও হচ্ছিল। আমরা বললাম, ভিজব না। তাই ইউনিয়ম রুমে গিয়ে ওকে ম্যাসাজ করে দিচ্ছিলাম।”
গত কয়েকদিনে বিভিন্ন কলেজের একাধিক ভিডিয়ো সামনে এসেছে। কোথাও দেখা গিয়েছে, ছাত্রীকে দিয়ে মাথা টেপাচ্ছেন টিএমসিপি নেতা। কোথাও ছাত্রদের গোপনাঙ্গ দেখছেন শাসকদলের ছাত্রনেতা। এবার ইউনিয়ন রুমে ম্যাসাজ ঘিরে বিতর্ক বেড়েছে।