
ডায়মন্ড হারবার: প্রেমিকের সঙ্গে নতুন করে সংসার পাতার জন্য তিন বছরের কন্যাসন্তানকে আছড়ে খুনের অভিযোগ উঠল মা ও তাঁর প্রেমিকের বিরুদ্ধে। নিহত শিশুকন্যার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে ডায়মন্ড হারবারের পারুলিয়া থানার পুলিশ অভিযুক্ত মা নাজিরা বিবি এবং তাঁর প্রেমিক তাজউদ্দিন লস্করকে গ্রেফতার করেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গত বছরের জুলাই মাসের শেষের দিকে ডায়মন্ড হারবারের কামারপোল এলাকায় শ্বশুরবাড়ি থেকে শিশুসন্তান-সহ আচমকা নিখোঁজ খোঁজ হয়ে যান নাজিরা বিবি। কোথাও কোন খোঁজ না পেয়ে ডায়মন্ড হারবারের পারুলিয়া উপকূল থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন তাঁর স্বামী আজহার লস্কর। পুলিশ অপহরণের মামলা রুজু করে তদন্ত নেমে জানতে পারে, রায়দিঘির বাসিন্দা পেশায় বাস কন্ডাক্টর তাজউদ্দিন লস্করের সঙ্গে অন্ধপ্রদেশে চলে গিয়েছেন ওই গৃহবধূ।
নাজিরা বিবি চিংড়ি ফ্যাক্টরিতে কাজে যেতেন। যাতায়াতের পথে পরিচয় থেকে সম্পর্ক গড়ে ওঠে রায়দিঘি এলাকার ওই বাস কন্ডাক্টরের সঙ্গে। তবে পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করতে গিয়ে জানতে পারে, ওই গৃহবধূর কন্যাসন্তান মারা গিয়েছে। এবং সেখানে তাকে কবরস্থ করা হয়েছে। পুলিশের সন্দেহ হওয়ায় সম্প্রতি ওই গৃহবধূ এবং তাঁর প্রেমিককে অন্ধপ্রদেশ থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে ডায়মন্ড হারবারে নিয়ে আসে।
আজহার লস্করের দাদা লাল্টু লস্কর বলেন, “আমার ভাইয়ের স্ত্রী তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে রাত ২টার সময় পালিয়ে যান। মেয়েকেও নিয়ে যান। পরে আমরা যোগাযোগ করে মেয়েকে ফিরিয়ে দিতে বলি। পরে বলে ফিরিয়ে দেবে। তারপর একদিন বলে জলে ডুবে মারা গিয়েছে। আবার কখনও বলে, ইলেকট্রিক শক খেয়ে মৃত্যু হয়েছে। আমাদের সন্দেহ হওয়ায় পুলিশের দ্বারস্থ হই।”
পুলিশ জানিয়েছে, জেরার মুখে ভেঙে পড়ে কন্যাসন্তানকে আছড়ে খুন করার কথা স্বীকার করে নেন নাজিরা বিবি ও তাঁর প্রেমিক। ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিতুন দে বলেন, “দু’জনকে মুখোমুখি এবং আলাদা আলাদা করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তখনই জানা যায়, প্রেমিকের সাহায্যে মেয়েকে আছাড় মেরে খুন করেন নাজিরা বিবি।”