
পাথরপ্রতিমা: স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সভানেত্রীকে প্রকাশ্যে বাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে এসে মারধরের অভিযোগ। দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে রেখে চলে মার। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমার গোপালনগর পঞ্চায়েত এলাকায়। শেষে পুলিশ এসে উদ্ধার করল মহিলাকে। কিন্তু, ঘটনার সূত্রপাত কোথায়? সূত্রের খবর, নির্যাতিতা মহিলা এলাকার একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সভানেত্রী ছিলেন। অভিযোগ, গোষ্ঠীর বাকি সদস্যদের অন্ধকারে রেখে তিনি নিজে গোষ্ঠীর নাম করে কয়েক লক্ষ টাকা ঋণ নেন।
ঘটনা জানতে পারা মাত্রই গোষ্ঠীর বাকি সদস্যরা মহিলার সঙ্গে কথা বলতে যান। তাঁকে ঋণ পরিশোধ করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু, তিনি পরিশোধ না করায় গোষ্ঠীর অনেক সদস্য মঙ্গলবার সকালে সভানেত্রীর বাড়িতে চড়াও হন। দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয় বচসা। অভিযোগ, বচসার মধ্যের গোষ্ঠীরই এক মহিলাকে চড় মারেন সভানেত্রীর স্বামী। তাতেই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। শুরু হয়ে যায় হাতাহাতি।
এরইমধ্যেই সভানেত্রীকে বিদ্যুতের খুঁটির মধ্যে বেঁধে ফেলেন গোষ্ঠীর অন্য মহিলারা। চলে মার। মারের চোটে শাড়ি খুলে মাটিতে লুটোপুটি খেতে থাকে ওই মহিলার। এমনকী সেই দৃশ্য আবার কয়েকজনকে মোবাইলে রেকর্ডও করে রাখতে দেখা যায়। এরইমধ্যে খবর যায় পুলিশে। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। উদ্ধার করা হয় নির্যাতিত মহিলাকে। এদিকে ঘটনার পরেই দু’পক্ষেই একে অপরের বিরুদ্ধে থানায় শ্লীলতাহানি ও মারধরের অভিযোগ দায়ের করেছে। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এখনও চাপা উত্তেজনা রয়েছে এলাকায়।
ঘটনায় গোষ্ঠীর এক সদস্য বলেন, “আমরা যখন টাকার ওদের বাড়ি গিয়েছিলাম তখন এক বয়স্ক মহিলাকে সভানেত্রীর স্বামী চড় মারেন। আরও অনেক সদস্যকেও মারে। তখন আমরা ওকে বেঁধে রাখি। তারপর ছেড়েও দিই। থানায় ডেকেছিল আমাদের। গিয়েছিলাম। আমরা এখন আমাদের টাকা ফেরত চাই। আমাদের অন্ধকারে রেখে ৬ লক্ষ টাকা নিয়েছে। ১৪ মাস আগে থেকে এই সমস্যা। নানা জায়গায় জানিয়েছি টাকার কথা। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি।”
নির্যাতিতা মহিলা বলেন, “আমার মেয়ের বিয়ের সময় টাকাটা নিয়েছিলাম। তারপর দিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। ওরা একদিন আগে আমাদের বাড়িতে ফের টাকা চাইতে আসে। ওদের বলি, টাকা আমি দিয়ে দেব। একটু সময় দাও। ওরা বলে এখনই দিতে হবে সব টাকা। তারপরই আমাকে মারতে শুরু করে। পোস্টে নিয়ে গিয়ে বেঁধে রাখে।”