
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বাড়িতে অনেকগুলো ভাসুর। কারোরই বিয়ে হয়নি। কিন্তু ভাইয়ের বউয়ের ওপর নজর ছিল। ভাইকে কিছুতেই সংসার করতে দিতে চাইতেন না তাঁরা। ভাইয়ের বউয়ের ওপরেই নানারকমভাবে শারীরিক অত্যাচার করতেন বলে অভিযোগ। এবার সেই ভাসুরদের বিরুদ্ধেই আরও বড় অভিযোগ তুললেন গৃহবধূ। শৌচালয়ে ঢুকে মুখে কালো কাপড় বেঁধে জাপটে ধরেছিলেন বলে অভিযোগ। হাত পা বাঁধা অচৈতন্য অবস্থায় ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করেন পরিবারের সদস্যরা। ক্যানিংয়ের এক নিগৃহীত গৃহবধূর বয়ানে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। ঘটনাটি ঘটেছে ক্যানিংয়ের তালদি গ্রামে। অভিযোগের তির ভাসুরদের বিরুদ্ধে। অসুস্থ অবস্থায় ওই গৃহবধূ বর্তমানে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার খবর পেয়েই তৎপরতার সঙ্গে তদন্ত শুরু করেছে ক্যানিং (Canning) থানার পুলিশ। যদিও ঘটনায় কাউকে আটক বা গ্রেফতার করতে পারেনি।
জানা গিয়েছে, প্রায় বছর তিন আগে পূর্ব বয়ারসিং গ্রামে রহিম শেখের মেয়ে রেজিনা শেখের সঙ্গে পূর্ব শিবনগর গ্রামের আবুজাফর সরদারের। অভিযোগ বিয়ের পর থেকে শ্বশুর বাড়িতে শারীরিক ও মানসিক অত্যচার করতেন ভাসুর মোফিজুল,আবু তাহের,মনিরুল সর্দার। পেশায় ভ্যান চালক আবুজাফর স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতেই চলে যান। সেখানেই বসবাস শুরু করেন। দম্পতির এক পুত্র সন্তান রয়েছে।
নিগৃহীতার পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য, যাতে আবুজাফর স্ত্রীকে নিয়ে সংসার করতে না পারেন,তার জন্য বিগত কিছুদিন আগে ওই বধুর বাপের বাড়িতে চড়াও হন ভাসুররা। তাঁর চোখে লঙ্কা গুঁড়ো ছিটিয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। যদিও চিকিৎসকদের তৎপরতায় কোনও রকমে প্রাণে বেঁচে যান বধূ।
ঘটনার বিষয়ে ২০২২ এর ১১ সেপ্টেম্বর ক্যানিং থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। আরও অভিযোগ, রবিবার ওই বধূ বাপের বাড়িতেই ছিলেন। বাড়িতে তাঁর প্রতিবন্ধী বাবা ছিলেন না। স্বামী গিয়েছিলেন ভ্যান চালাতে। রাত ৭ টা নাগাদ ওই বধূর মা পাড়ার দোকানে গিয়েছিলেন ডিম কিনতে। ছোট সন্তানকে বোনের কাছে দিয়ে বাড়ির পিছনে শৌচালয়ে গিয়েছিলেন। ঠিক সেই সময় সুযোগ বুঝে কালো কাপড় মুখে বাঁধা দুই ব্যক্তি শৌচালয়ের মধ্যে থেকে বধূকে জাপটে ধরেন।
কাপড় দিয়ে বধূর মুখ চেপে ধরে দু’হাত বেঁধে বাড়ির পিছনে ফেলে রেখে পালিয়ে যান। অচৈতন্য অবস্থায় ওই বধূ গোঙাতে থাকেন। ইতিমধ্যে ওই বধূর মা বাড়িতে ফিরে মেয়েকে না পেয়ে খোঁজ খবর শুরু করেন। প্রতিবেশীরাও দৌঁড়ে যান। পরে গোঙানির শব্দ শুনতে পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন। চিকিৎসার জন্য তড়িঘড়ি ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যায় ক্যানিং থানার পুলিশ। বধূর অভিযোগ, “সংসার করতে দেবে না বলেই ভাসুর’রা আমাকে মেরে ফেলার চক্রান্ত করে এমন কাজ করেছেন। কাপড়ের মধ্যে ওষুধ জাতীয় কিছু ছিলে। যার ফলে মুখ বেঁধে দেওয়ায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। ওদের চরম শাস্তি চাই।”