
কুলতলি: আইফোন দিতেই হবে। স্মার্টফোন থাকা সত্ত্বেও বেশ কিছুদিন ধরেই জ্যেঠুর কাছে বায়না করছিল দশম শ্রেণির ছাত্র। জ্যেঠু কিছুটা সময় চেয়েছিলেন। সেটুকুও দিতে রাজি ছিল না সে। শেষ পর্যন্ত মৃত্যুকেই বেছে নিল দশম শ্রেণির ছাত্র দীপাঞ্জন দাস। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি থানার গোপালগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের শানকিজাহান এলাকার ঘটনা। আজ, সোমবার বিকেলে কিশোরের দেহ উদ্ধার হয় বাড়ি থেকেই। ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
নিমপীঠ আশ্রমের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল দীপাঞ্জন। তার বাবা পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক। কয়েকমাস আগে প্রায় ৩২ হাজার টাকা দিয়ে তাকে একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন কিনে দিয়েছিলেন তাঁর বাবা ভাস্কর দাস। কিন্তু জন্মদিন উপলক্ষে সে আবারও মা-বাবার কাছে আইফোন কিনে দেওয়ার অনুরোধ জানায়। পরিবার তা অস্বীকার করাতেই নাকি দীপাঞ্জন মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে।
দীপাঞ্জনের জ্যেঠু জানিয়েছেন, তিনি তাঁর ভাইপোকে বলেছিলেন হস্টেলে গিয়ে পড়াশোনা করতে ও পরীক্ষা দিতে। কিন্তু ভাইপো জানিয়ে দেয়, আইফোন না পেলে সে হস্টেলে যাবে না। জ্যেঠু তাকে আশ্বাস দিয়েছিলেন, মাস দুয়েক পর হস্টেল থেকে ফিরে এলে আইফোন কিনে দেবেন তিনি। অত টাকা জোগাড় করতেই সময় চেয়েছিলেন। ভাইপোর উত্তর ছিল, ‘তোমাদের কথার কোনও দাম নেই।’ আমি সুইসাইড করব বলে নাকি হুঁশিয়ারিও দিত ওই ছাত্র।
এমনকী ফোন না পেয়ে খাওয়া-দাওয়া পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছিল ওই ছাত্র। পরিবারের দাবি, গত কয়েকদিন ধরে সে ঠিকমতো খাওয়াদাওয়াও করছিল না। সোমবার বিকালে দিদার বাড়িতে দীর্ঘক্ষণ দীপাঞ্জনকে না দেখে খোঁজ করতে গিয়ে ঘরের ভিতর তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায় পরিবারের সদস্যরা। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে জামতলায় জয়নগর-কুলতলি ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার তার দেহের ময়নাতদন্ত হবে। প্রতিবেশীরা বলছেন, পড়াশোনায় ভাল ছিল দীপাঞ্জন। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া পরিবারে।