
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: কাজ থেকে ফিরে অন্যান্য দিন মাকে বাড়ির উঠোনেই দেখতে পান ছেলে। কিন্তু এদিন তেমনটা হয়নি। ডেকেও সাড়া মিলছিল না। কিন্তু তখনও ছেলে বিন্দুমাত্র বিপদের আঁচ করেননি। ঘরের মেঝেতে পা রাখতেই দেখে ফোঁটা ফোঁটা রক্ত পড়ে রয়েছে মেঝেতে। ভিতরে ঢুকতেই ছ্যাঁৎ করে ওঠে ছেলের বুক। মায়ের গলার নলি ফুঁড়ে গিয়েছে ধারাল ছুরি। রক্তে ভিজে সর্বাঙ্গ। গোঙাচ্ছেন তাঁর মা। যতক্ষণে প্রতিবেশীদের ডেকে নিয়ে মাকে হাসপাতালে নিয়ে যান, ততক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছে অনেক। মৃত্যু হয়েছে প্রৌঢ়ার। মায়ের এই পরিণতির জন্য বাবার বিরুদ্ধেই গর্জে ওঠেন ছেলে। হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে অভিযোগ করেন, বাবাই তাঁর মায়ের গলার নলি কেটে খুন করেছেন। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ডায়মন্ড হারবারের পারুলিয়া কামারপোল দিঘিরপাড় এলাকায়। মৃতের নাম জাসমিনা বিবি। ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত খালেক মোল্লা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, খালেক মোল্লা দিনমজুরির কাজ করেন। স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বিবাদ লেগেই থাকত। ইদানীং অন্য এক মহিলার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন খালেক। তা জানতে পেরে যান জাসমিনা। তাতেই বিবাদ আরও চরমে ওঠে। প্রতিবেশীরাও সে কথা জানতেন। মাঝেমধ্যে তাঁদের বিবাদে মধ্যস্থতাও করতেন। আবার কখনও একান্ত ব্যক্তিগত বিষয় ভেবে তাতে আমল দিতে না।
প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যাতেও তাঁরা অশান্তি শুনতে পেয়েছিলেন। কিন্তু রোজকার ঝামেলা ভেবে ওতটাও মাথা ঘামাননি। কিন্তু তার মধ্যে এমন কিছু ঘটতে পারে, তা আঁচ করতে পারেননি। জাসমিনার ছেলে নাজিবুল সকালে কাজে গিয়েছিলেন। রাতের দিকে বাড়ি ফিরে আসেন।
তখনই ঘরে তাঁর মাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান তিনি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। দেহটি উদ্ধার করে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। ঘটনার পর থেকে পলাতক অভিযুক্ত স্বামী খালেক মোল্লা। নাজিবুলের অভিযোগ, মাকে খুন করেছেন তাঁর বাবাই। কারণ বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁর মা। ছেলে বলেন, “মাকে ওই অবস্থায় দেখে মাথা কাজ করছিল না। এটা আর কেউ নয়, আমার বাবাই করেছে।” সেই কারণেই খুন! ছেলের অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে অভিযুক্তের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ।