
সোনারপুর: ফোনের রিংটোন। আর তার সঙ্গে এল সাহায্য চেয়ে একটি মেসেজ। পুলিশের ফোনেই মেসেজটি আসে প্রথমে। ওপার বাংলার এক নাবালিকা সাহায্য চেয়ে কোনও মতে লুকিয়ে মেসেজটি করে। কিন্তু কী ঘটেছে তার সঙ্গে? ছোট মেয়েটির অভিযোগ, এক যুবক তাকে নাকি ফুঁসলিয়ে এই দেশে (ভারত) নিয়ে এসে বিক্রি করে দিয়েছে যৌনপল্লিতে।
কী ঘটনা?
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৭ ফেব্রুয়ারি পুলিশের আস্থা নামের একটি অ্যাপে এক নাবালিকার মেসেজ আসে। ওই মেসেজে নাবালিকা পুলিশের কাছে সাহায্য চায়। পরবর্তীতে পুলিশ জানতে পারে বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলা থেকে এই নাবালিকাকে তার প্রেমিক অন্য এক তরুণের হাতে তুলে দেয়। অভিযোগ, সেখান থেকে বর্ডার পার করিয়ে ওই যুবক পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের একটি যৌনপল্লীতে মেয়েটিকে বিক্রি করে দেয়।
নাবালিকা জানিয়েছে, বাংলাদেশে থাকাকালীন এক যুবকের সঙ্গে তার প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মেয়েটি বুঝতে পারেনি যে ছেলেটি এইভাবে তার সঙ্গে প্রতরণা করবে। পরে তাকে পূর্ব মেদিনীপুরের যুবকের কাছে বিক্রি করে দেয়।
ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় যৌনপল্লীর দুই মহিলাকে। পরবর্তীকালে তল্লাশি চালিয়ে আরও ছয়জনকে সোনারপুর ও অন্যান্য জায়গা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, সোনারপুর থেকে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের বাসিন্দা। বেআইনিভাবে ভোটার কার্ড তৈরি করে এই রাজ্যে জমাদার সেজে তারা থাকছিল। অভিযুক্তদের প্রত্যেককে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে আরও কারা এই চক্রের সঙ্গে জড়িত তার খোঁজ শুরু করেছে ডায়মন্ডহারবার পুলিশ।
এক পুলিশ আধিকারিক জানান, “সাত তারিখ আস্থাতে আমরা একটি এসএমএস পাই। যারা এই অ্যাপটি দেখাশোনা করেন তারাই বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেন। পরে লোকেসন দেখে বোঝা যায় নূরপুরের কাছের ঘটনা। সঙ্গে-সঙ্গে পুলিশের গাড়ি সেখানে যায়। উদ্ধার করা হয় এক নাবালিকাকে। তদন্তে নেমে জানতে পারা যায় মেয়েটি বাংলাদেশের। তাকে এদেশে পাচার করে যৌনপল্লীতে পাঠান হয়েছে। এই ঘটনায় ইতিমধ্যে ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন মহিলা।”