সুন্দরবন: প্রতিদিনের মতোই মাছ ধরতে গিয়েছিলেন বালিচরে একাধিকবার দেখাও গিয়েছিল পায়ের থাবা। তখনই সন্দহ হয়। এরপর বনদফতরের কর্মীরা নিশ্চিত করেন বাঘের উপস্থিতি। শেষমেশ খাঁচার ভিতর ধরা পড়ল বাঘ। বনকর্মীদের পাতা ফাঁদে পা দিল বাঘমামা। গত মাসখানেক আগে রায়দিঘির পূর্ব শ্রীধরপুর এলাকা সংলগ্ন ভুবনেশ্বরীচর জঙ্গলে আস্তানা নিয়েছিল ওই বাঘটি। মনি নদীর তটে অজস্র পায়ের ছাপ দেখে বাঘের আনাগোনা নিশ্চিত করেন মৎস্যজীবীরা। এমনকী ওই জঙ্গল থেকে বাঘের গর্জন শোনা যাচ্ছিল বলেও খবর। স্থানীয় বাসিন্দাদের মাধ্যমে সেই খবরই পৌঁছায় বনকর্মীদের কাছে। এরপর এক সপ্তাহেরও বেশী সময় ধরে বনদফতর চেষ্টা চালাচ্ছিল লোকালয়ের জঙ্গলে ঢুকে পড়া বাঘটিকে খাঁচা বন্দি করতে। তবে হিমসিম খেতে হচ্ছিল তাদের।
অন্যদিকে, এলাকার বাসিন্দাদের প্রত্যেক দিনের কাজ ব্যাহত হচ্ছিল। এরপর রায়দিঘি রেঞ্জ অফিসের বনকর্মীরা ছাগলের টোপ দিয়ে খাঁচা পাতার পাশাপাশি জঙ্গলটিকে শক্তপোক্ত নাইলোনের জাল দিয়ে ঘিরে ফেলে। কিন্তু নাছোড় বাঘ বাঘটি কোনও ভাবেই খাঁচাবন্দি হচ্ছিল না। অবশেষে বনকর্মীদের অক্লান্ত চেষ্টায় সোমবার বিকেলে খাঁচা বন্দি হল বাঘটি।
বনদফতর সূত্রের খবর, ধরা পড়া বাঘটি পূর্ণবয়স্ক পুরুষ বাঘ। বয়স সাত থেকে আট বছর বলে অনুমান। পশু চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে বাঘটিকে পর্যবেক্ষণের জন্য সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকার রাখা হবে। ফলে খাঁচা বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সজনেখালিতে। শারীরিকভাবে সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকলে শীঘ্রই সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে ছাড়া হবে বলে জানা গিয়েছে। বাঘের আতঙ্কে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন এলাকার বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দা ইয়াসিন গাজী জানান, “বাঘটা এত বড় যে খাঁচার ভিতরে রাখতে বনকর্মীদের বেগ পেতে হচ্ছিল। বাঘটা লোকালয়ের জঙ্গলে ঢোকার পর থেকে ভীষণ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম আমরা। বনকর্মীদের অসংখ্য় ধন্যবাদ। দিনের-পর-দিন জঙ্গলে পড়ে থাকে বাঘটাকে খাঁচাবন্দি করতে পারল।” এই বিষয়ে রায়দিঘির রেঞ্জার স্বপন মণ্ডল জানান, “বাঘটা যাতে লোকালয়ে ঢুকতে না পারে তার জন্য সর্বতভাবে চেষ্টা চালানো হয়েছে। নজরদারি চালানো হয়েছিল জঙ্গল সহ লোকালয়ের এলাকা। বাঘটি সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকলে দ্রুত জঙ্গলে ছাড়া হবে।”
আরও পড়ুন: WBCSC: সব প্রতিবন্ধকতাকে ‘ফুঁ’ দিয়ে উড়িয়ে অফিসার হওয়ার পথে আলিপুরদুয়ারের মেয়ে