বাসন্তী: পাশাপাশি সাজানো ছিল তিনটি চিতা। একই পরিবারের তিন ছেলের এমন ভয়াবহ পরিণতি দেখেছিল বাসন্তীর গায়েন পরিবার। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল হারান গায়েন, নিশিকান্ত গায়েন ও দিবাকর গায়েনের। নিহত হন ওই এলাকারই আরও দু’জন বিকাশ হালদার ও সঞ্জয় হালদার। ঘটনার পর কেটে গিয়েছে তিন দিন। কিন্তু ওই পরিবার এখনও শোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি। এ দিন, গায়েন পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে বাসন্তী পৌঁছন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তাঁকে দেখেই হাউহাউ করে কেঁদে ফেলেন তিন সন্তান হারা বৃদ্ধা মা।
রাজ্যপাল নিজেও বৃদ্ধার দু’হাত ধরেন। সান্ত্বনা দেওয়ার পাশাপাশি শোকাহত পরিবার দু’টির পাশে থাকার আশ্বাস দেন। রাজ্যপাল ছ’মাস তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দু’হাজার টাকা করে দেবেন। তাছাড়াও এককালীন পঞ্চাশ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। এর পাশাপাশি পারলৌকিক কাজের জন্য সমস্ত খরচ বহন করবে রাজভবন। এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যপাল।
শুধু ক্ষতিপূরণ নয়, একই সঙ্গে সিভি আনন্দ বোস এদিন ফল জামাকাপড় সঙ্গে করে নিয়ে আসেন শোকাহত পরিবারদের দেওয়ার জন্য। বিডিওর মাধ্যমে দ্রুত সেগুলো তাঁদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হবে বলেও জানান। শুধু তাই নয় শ্রাদ্ধের সমস্ত খরচ বহন করবে রাজভবন। অন্যদিকে যাঁদের ‘জনধন’ অ্যাকাউন্ট আছে তাঁদের অ্যাকাউন্টে দশ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন রাজ্যপাল। পরিবারের সঙ্গে দেখা করে রাজ্যপাল পুনরায় ফিরে যান কলকাতায়।
এখানেই শেষ নয়, এলাকার মানুষজন রাজ্যপালকে পেয়ে বেশ কিছু অভাব অভিযোগের কথাও জানান। বিশেষ করে এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা,নদী বাঁধার সমস্যা সবটাই একমনে শোনেন রাজ্যপাল। বিডিওকে ডেকে রাজ্যপাল সমস্ত সমস্যার সমাধানের নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার হারান গায়েন, নিশিকান্ত গায়েন ও দিবাকর গায়েন উঠেছিলেন অভিশপ্ত ট্রেনে। সঙ্গে ছিলেন আরও দুই বন্ধু বিকাশ হালদার ও সঞ্জয় হালদার। ধান চাষের শ্রমিক হিসেবে অন্ধ্রপ্রদেশে কাজের জন্য যাচ্ছিলেন। কিন্তু ভয়ঙ্কর ট্রেন দুর্ঘটনা কেড়ে নেয় পাঁচটি তাজা প্রাণ।