দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ছাদনাতলায় বর হাজির। পানপাতা মুখে পিঁড়িতে কনে। সানাইয়ের সুর তখন সপ্তমে সঙ্গে নিমন্ত্রিতদের হুল্লোড়ও। হঠাৎই বাড়ির সামনে এসে দাঁড়াল পুলিশের গাড়ি। নিমন্ত্রিতরা তখনও বুঝতে পারেননি কী হয়েছে। কিন্তু পাত্র ও পাত্রী পক্ষ তখন বোধহয় কিছুটা হলেও আঁচ করতে পেরেছিলেন। পুলিশ আসছে দেখতে পেয়েই বিয়ে মাঝপথে থামিয়ে পাত্র পগার পার। পুরোহিত তো রীতিমতো ভ্যাবাচাকা খেয়ে গিয়েছেন। খপাৎ করে তাঁরই হাতটা চেপে ধরে পুলিশ। নিমন্ত্রিতরা, পরিজনরা হতবাক। কী কাণ্ড! পানপাতা মুখ থেকে সরিয়ে ততক্ষণে ঘরের ভিতর পাত্রীও। আরও একবার একেবারে ছাদনাতলায় উপস্থিত হয়ে নাবালিকার বিয়ে (Minor Marriage) বন্ধ করল পুলিশ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির (Kultali) জামতলা এলাকার ঘটনা।
সোমবার রাতে গোপন সূত্রে পুলিশ খবর পায় কুলতলির কাওরাখালির এক নাবালিকার সঙ্গে জামতলার এক যুবকের বিয়ে হচ্ছে। পাত্রীর বাবা দিনমজুরির কাজ করেন। সংসারের খরচ সামলানোর পর মেয়ের পড়ার খরচ সামাল দেওয়া তাঁর কাছে রীতিমতো বিলাসিতার সামিল। আত্মীয়দের মারফত খবর এসেছিল ‘ভালো পাত্রের’। দু’পক্ষের সহমতের ভিত্তিতে বিয়ের তারিখও পাকা হয়ে যায়। মাঘ মাসেই পাকা হয় বিয়ে। সেই মোতাবেক সব ঠিকও হয়ে যায়। যতটুকু যা সামর্থ্য ছিল, তার ভিত্তিতে আয়োজন করেন পাত্রীর বাবা। লগ্ন মেনে ছাদনাতলায় উপস্থিত হয়ে যান পাত্রও।
তারইমধ্যে কেউ বা কারা খবর দেন থানায়। পাত্রী নাবালিকা। সেই খবর পাওয়া মাত্রই ছাদনাতলায় এসে হাজির পুলিশ। নাবালিকার বিয়ে হচ্ছে খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কুলতলি থানার পুলিশ। পুলিশ আসা মাত্রই পিছন থেকে পালিয়ে যান পরিবারের সদস্যরা। পুলিশ গিয়ে বিয়ে বন্ধ করে। ছাদনাতলা থেকে পুরোহিত-সহ কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে কুলতলি থানার পুলিশ।
পুরোহিতের বক্তব্য, “আমাকে তো জোর করে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। বলল বিয়ে দিতে হবে। আমি তো চলেই আসছিলাম। বলল খাওয়া দাওয়া করে যান… তাই থেকে গিয়েছিলাম।” পাত্র ও পাত্রীর পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।