কলকাতা: সপ্তাহের শুরুতেই একাধিক পথ দুর্ঘটনা ঘটল রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। কোথাও নাইট ডিউটি সেরে বাড়ি ফেরার পথ বাসের চাকায় পৃষ্ট হলেন এক মহিলা। কোথাও মোবাইল কানে দিয়ে রেললাইন পেরনোর সময় ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল ব্যক্তির। কোথাও আবার লরির ধাক্কায় মৃত্যু বাইকআরোহী। মধ্য রাতে দুটি গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষের জেরে আহত হয়েছেন পাঁচ জন। আহতদের পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের স্থানান্তরিত করা হয়েছে কলকাতার হাসপাতালে। দুর্ঘটনায় মৃতদের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। ঘাতক বাসের চালককে আটক করা হয়েছে।
বাসের ধাক্কায় মহিলার মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ঠাকুরপুকুর থ্রিএ বাসস্ট্যান্ডের কাছে। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ওই মহিলা ইএসআই হাসপাতালে কর্মরত। নাইট ডিউটি করে সোমবার সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। ঠাকুরপুকুরের বাসিন্দা ওই মহিলার নাম রুপা মণ্ডল (৩৯)। সে সময় পৈলানের দিক থেকে দুটি বেসরকারি বাস রেষারেষি করে আসছিল। ওই মহিলা নিজের ছেলের স্কুটিতে করে বাড়ি ফিরছিলেন। রেষারেষি করা এসডি১৬ রুটের বাস ধাক্কা মারে রূপার ছেলের স্কুটিতে। এর জেরেই স্কুটি থেকে মাটিতে ছিটকে পড়েন তিনি। এবং বাস পিষে দেয় তাঁকে। এর জেরে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। মহিলার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য বিদ্যাসাগর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত বাসের চালককে আটক করেছে ঠাকুরপুকুর থানার পুলিশ।
অন্য দিকে, মেদিনীপুর শহরের রাঙ্গামাটি এলাকায় উড়ালপুলের নিচে রেললাইন পেরিয়ে বাজার করতে গিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। সে সময় কানে মোবাইল নিয়ে কথা বলতে বলতে রেললাইন পার করছিলেন বলে অভিযোগ। সে সময়ই ট্রেন এসে ধাক্কা মারে তাঁকে। ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তি রাঙামাটির সূর্যনগর এলাকার বাসিন্দা। মালগাড়ির ধাক্কায় ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যক্তির।
সোমবার সকালে মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনা ঘটল ঝাড়গ্রাম জেলার ঝাড়গ্রাম ব্লকের সাঁওতালডিহা এলাকায়। রেশন বোঝাই লরির সঙ্গে বাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে এক বাইক আরোহী। এর পরই ঘটনাস্থলে পুলিশকে ঘিরে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন গ্রামবাসীরা। মৃত ব্যক্তি পেশায় পুলিশের হোমগার্ড। ডিউটি করে মানিকপাড়া থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। সাঁকরাইল ব্লকের ধগাড়ি গ্রামের বাসিন্দা তিনি। নাম সমীর মাহাত। ঝাড়গ্রাম ব্লকের সাঁওতালডিহা এলাকায় উল্টো দিক থেকে আসা একটি রেশন বোঝাই গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় তাঁর বাইকের। এর পরই ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় রেশন বোঝাই লরি। সমীরকে গুরুতর অবস্থায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পাঠায়। সেখানকার চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে।
সোমবার ভোররাতে হাড়োয়ায় ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন পাঁচ জন। বসিরহাটের হাড়োয়া থানার সোনাপুকুর-শংকরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঝুঝুরগাছা এলাকায় ঘটেছে এই দুর্ঘটনা। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার গভীর রাতে যাত্রী বোঝাই একটি অটো ভাঙড়ের দিকে যাচ্ছিল। ভাঙড়ের দিক থেকে একটি বাইক হাড়োয়ার দিকে আসছিল। ঝুঝুরগাছা এলাকায় আসতেই দুই গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। ঘটনায় দুই মহিলা সহ আহত হয় পাঁচ জন। স্থানীয় বাসিন্দারা আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাড়োয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। আহতদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে কলকাতার আর.জি. কর মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় হাড়োয়া থানার পুলিশ। কী করে ঘটল এই দুর্ঘটনা? তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।