Samik Bhattacharya: “ঠান্ডা ঘরে বসে জ্ঞানগর্ভ বাণী দিলেই চলবে না”, এবার শমীকের তোপের মুখে CEC জ্ঞানেশ কুমার
Samik Bhattacharya On CEC: প্রশ্ন হচ্ছে, হঠাৎই কেন শমীকের এহেন উক্তি? শক্রবার ডায়মন্ড হারবারের বিজেপি নেতা অভিজিৎ দাস ববি অর্থাৎ যিনি গত লোকসভা নির্বাচনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছিলেন, তিনি সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট করেন। তাঁর অভিযোগ, ফলতার বিডিও এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা জাহাঙ্গিরের কথায় মৃত ভোটারের নাম তুলতে বিএলও-দের চাপ দিচ্ছেন।

ডায়মন্ড হারবার: SIR বিরোধিতায় এতদিন শাসকদলের অভিযোগ ছিল, নির্বাচন কমিশন নাকি কোনও একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করছে! বারবার মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের বিরুদ্ধে নাম না করে তোপ দাগতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু এবার হঠাৎই যেন উলটপুরাণ! এবার বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের তোপের মুখে CEC জ্ঞানেশ কুমার। তিনি আবার সরাসরি নাম করেই তোপ দাগলেন। বললেন, “জ্ঞানেশ কুমারকে ওখানে বলে দুটি জ্ঞানগর্ভ বাণী দিলেই চলবে না।” তাঁকে গ্রাউন্ড জিরোয় এসে আসল পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পরামর্শও দিলেন।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, হঠাৎই কেন শমীকের এহেন উক্তি? শক্রবার ডায়মন্ড হারবারের বিজেপি নেতা অভিজিৎ দাস ববি অর্থাৎ যিনি গত লোকসভা নির্বাচনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছিলেন, তিনি সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট করেন। তাঁর অভিযোগ, ফলতার বিডিও এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা জাহাঙ্গিরের কথায় মৃত ভোটারের নাম তুলতে বিএলও-দের চাপ দিচ্ছেন। এরপর বিকালে সেখানে সাংবাদিক বৈঠক করেন শমীক। তিনি অভিযোগ করেন, এসআইআর মানবে না বলে এখন বিএলওদের মিথ্যা তথ্য আপলোড করাচ্ছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে আগামী সপ্তাহেই জাতীয় নির্বাচন কমিশনে যাওয়ার কথাও ঘোষণা করলেন শমীক। সেটা ২ থেক ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে হবে, সে কথাও জানিয়ে রাখলেন। এখনও পর্যন্ত বাংলায় অনুপ্রবেশকারী রয়ে গিয়েছেন বলেও জানান তিনি। আর তাঁদের নামও তোলার জন্য সক্রিয় শাসকদল, তেমনই অভিযোগ শমীকের। সেক্ষেত্রে কমিশনকে আরও দৃঢ়ভাবে এই বিষয়টি ‘গ্রাউন্ড জিরো’য় এসে খতিয়ে দেখতে হবে, সেটারই দাবি তুলেছেন শমীক।
উল্লেখ্য, এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, প্রায় দেড় কোটি নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়তে চলেছে। ডেডলাইন ৪ তারিখ। ফর্ম ডিজিটাইজেশনের শেষ দিন। হাতে আর কয়েকটা দিন। তারপর ৯ তারিখ খসড়া তালিকা প্রকাশ করবে কমিশন। তারমধ্যে শুক্রবারই কমিশনের দেওয়া তথ্য বলছে, এখনও পর্যন্ত ২৭ লক্ষ ৭১ হাজার ফর্ম আন কালেকটেড। শমীকের অভিযোগ, আসলে তো এসআইআর প্রক্রিয়ার মধ্যেও শাসকদল প্রভাব খাটাচ্ছে।
শমীক বলেন, “বস্তি খালি হয়েছে। কিন্তু বর্ডারে যারা বসে, তাদের থেকে এ রাজ্যে বাংলাদেশির সংখ্যা অনেক বেশি। যেটা দেখানো হচ্ছে, বাংলাদেশিরা ফিরতে চাইছে, তারা একটা অংশ।” আর বাকি অংশ? শমীকের কথায়, অনুপ্রবেশকারীরা এখনও রয়েছেন, আর তাঁদের নামও তোলার চেষ্টা হচ্ছে। শমীক বলেন, “DEO আত্মসমর্পণ করে ফেলেছেন প্রশাসনের কাছে। প্রতিনিয়ত চাপে বিএলওরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। পরিকল্পিতভাবে বিএলওদের চাপে রাখছে সরকার। ” বিএলও-দের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব কমিশনেরই বলে দাবি করলেন শমীক। যদিও CEC জ্ঞানেশ কুমার আগে স্পষ্ট করেছিলেন, বিএলও-দের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে হবে রাজ্যকেই।
এই নিয়ে কথা বলতে গিয়েই সরাসরি CEC জ্ঞানেশ কুমারের বিরুদ্ধে সরব হন শমীক। তিনি বলেন, “জ্ঞানেশ কুমার ওখান থেকে বসে জ্ঞান গর্ভ দুটি বাণী দেবে না। হবে না এখানে আসতে হবে। দেখতে হবে। দুই জন প্রতিনিধি পাঠালে হবে না।” তিনি বলেন, “মুখ্য নির্বাচন কমিশনার যদি ভাবেন ওখানে বসে কন্ট্রোল করবেন তা হবে না। ফোনে কাজ করলে হবে না। প্রয়োজনে এখানে এসে অফিসে বসতে হবে জ্ঞানেশ কুমারকে।”
বারবার জ্ঞানেশ কুমারের বিবৃতির দাবি করছেন শমীক। তাঁর কথায়, “CEC-কেই জবাবদিহি করতে হবে। শুধু দিল্লি থেকে বললে হবে না।”, তাঁর আরও তাৎপর্যপূর্ণ বক্তব্য, “ঠান্ডা ঘর থেকে বেরিয়ে এসে এখানে আসতে হবে।” এসআইআর মামলায় বিএলও-দের ওপর চাপ তৈরির অভিযোগ আগেই সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে খোদ কমিশনই।
উল্লেখ্য, এদিনই আবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। বেরিয়ে এসে সাংবাদিক বৈঠকও করেন সাংসদরা। সেখান থেকে বেরিয়ে কার্যত ক্ষোভ উগড়ে দেন ডেরেক ও ব্রায়েন, শতাব্দী রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়রা। তাঁদের অভিযোগ, এসআইআরের ‘চাপে’ রাজ্যে এতজনের মৃত্যুর রক্ত লেগে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের হাতেই! এবার বঙ্গ বিজেপিরও তোপের মুখে CEC।
