সোনারপুর: করোনার কারণে অনেক টালবাহানা করে খুলেছে স্কুল। তাও নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী নিয়ে হচ্ছে ক্লাস। কিন্তু এ কী অবস্থা স্কুলের! স্কুল তো খুলে গিয়েছে। কিন্তু পড়ুয়ারা কোথায়? তাদের নেই কোনও দেখা। এদিকে সামনেই টেস্ট পরীক্ষা। তাই পড়ুয়াদের স্কুলে আনতে প্রাণ ওষ্ঠাগত হচ্ছে শিক্ষকদের।
অনেকদিন হল স্কুল খুলেছে। তবুও ফাঁকা ক্লাসরুম। সামনে মাধ্যমিক,উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা। কিন্তু যারা পরীক্ষা দেবে তাঁরা কই? তাঁদের উপস্থিতি অনেক কম! শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখর করতে তাই এবার অভিনব উদ্যোগ নিল ভাঙড়ের তাড়দহ হাইস্কুল। স্কুলের পক্ষ থেকে শিক্ষক শিক্ষিকারা আলাদা-আলাদা দলে ভাগ হয়ে স্কুলে না আসা ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়িতে-বাড়িতে যাচ্ছেন। কোথায় দেখা মিলছে কোথায়ও আবার দেখা নেই ছাত্র ছাত্রীদের।
ইতিমধ্যে অনেকেই সাংসারিক ভার বহনে দিন মজুরের কাজ করছেন। অনেকের আবার বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তাঁদের অবিভাবকদের সঙ্গে কথা বলছেন শিক্ষকরা। স্কুলে আসার জন্য অনুরোধও করছেন। আগামী সোমবার থেকে মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা। সেই পরীক্ষায় যাতে সকল ছাত্র ছাত্রী অংশগ্রহণ করে এবং স্কুল মুখি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা যাতে বাড়ে সেই অভিপ্রায়ে এই উদ্যোগ বলে জানাচ্ছেন তাড়দাহ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক, অভিজিৎ দাস। তিনি বলেন, “আমি স্কুল খোলার পর দেখলাম। প্রায় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ পড়ুয়া স্কুলে আসছে না। এইবার সেই জন্য সব শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়ে আমরা বেরিয়েছি কেন তারা স্কুলে আসছে না জানতে। কারণ এখন পাশ-ফেল কিছুই নেই। সরকারি সুযোগ-সুবিধা সমস্ত কিছু রয়েছে।অথচ তারা স্কুলমুখী হচ্ছে না। কারণ তাদের ভবিষ্যৎ লুকিয়ে আছে শিক্ষার মধ্যেই। কী কারণে তারা স্কুলে আসছে না তা দেখতেই আমরা ঘুরছি।” পাশাপাশি তিনি আরও জানিয়েছেন, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অনেকেই জানতই না স্কুল খুলেছে। ক্লাস হচ্ছে। সেকারণেই স্কুলে তারা যায়নি। এবার স্কুলে যাবে বলে অঙ্গিকার করলেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, এর আগে একই ছবি ফুটে উঠেছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার আরও এক স্কুল থেকে। বারুইপুরের বেগমপুর জ্ঞানাদা প্রসাদ ইনস্টিটিউট স্কুলের। জানা গিয়েছে, ওই স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা শনিবার এলাকার হাটে,বাজার কিংবা দোকান প্রভৃতি জায়গায় গিয়ে স্কুল পড়ুয়াদের স্কুলে আসা ও পরীক্ষা বসার জন্য আবেদন জানাচ্ছেন । পাশাপাশি টোটো কিংবা অটো করে এলাকায়-এলাকায় প্রচার করা হয়েছে। এর মধ্যে সোমবার থেকে স্কুলে নবম,দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের পরীক্ষা শুরু হতে চলেছে। তাই তারা যাতে স্কুলে পরীক্ষা দিতে আসে এই পোস্টারের মাধ্যমেই তার প্রচার করা হচ্ছে। এই স্কুলের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীতে পাঠরত পড়ুয়া আছে প্রায় ৫৭০ জন।কিন্তু স্কুল খোলা থাকলেও পড়ুয়া আসে একশোর কম। এখন তাই পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করতে জনসংযোগই ভরসা শিক্ষকদের।
আরও পড়ুন: ATM Robbery: ভেঙে পড়ে রয়েছে ভল্টের দরজা! খাস কলকাতায় রক্ষীবিহীন এটিএম ভেঙে টাকা লুঠের চেষ্টা