South 24 Pargana: স্কুলেছুট প্রায় শতাধিক ‘কন্যাশ্রী’! বেড়েছে নাবালিকাদের বিয়ে, পড়ুয়াদের স্কুলে ফেরাতে দুয়ারে শিক্ষক
Duare Sikshak: করোনা আবহে লকডাউন, তার পর একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগে অর্থনৈতিক দুরবস্থা চরমে। বাড়ছে স্কুলছুটের সংখ্যা। একের পর এক নাবালিকা বই ছেড়ে সংসারী হচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে অভিনব উদ্যোগ নিলেন প্রধান শিক্ষক।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: সুন্দরবনের (Sundarban) কুলতলিতে ভয়াবহ অবস্থা। করোনা আবহে লকডাউন, তার পর একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগে অর্থনৈতিক দুরবস্থা চরমে। বাড়ছে স্কুলছুটের সংখ্যা। একের পর এক নাবালিকা বই ছেড়ে সংসারী হচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে অভিনব উদ্যোগ নিলেন প্রধান শিক্ষক। পড়ুয়াদের স্কুলে ফেরাতে দুয়ারে দুয়ারে ছুটছেন শিক্ষকরা। নাবালিকাদের বিয়ে ঠেকিয়ে তাদের ফের স্কুলে ফেরাতে সচেষ্ট তাঁরা।
জানা গিয়েছে, গত লকডাউনেই কুলতুলির একটি স্কুলে স্কুলছুট প্রায় শতাধিক পড়ুয়া। আর তার মধ্যে বেড়েছে নাবালিকা বিয়ে। তাই পড়ুয়াদের স্কুলে ফেরাতে দুয়ারে শিক্ষকরা। ওয়কিবহাল মহল বলছে, শিক্ষায় ভয়াবহ অবস্থা সুন্দরবনে। লকডাউনের প্রভাবে ব্যাপক হারে বেড়েছে স্কুলছুট। তেমনই বেড়েছে নাবালিকা বিয়ে। প্রত্যন্ত সুন্দরবনের কুলতলি ব্লকের জামতলা ভগবান চন্দ্র হাই স্কুলই এলাকার সেরা স্কুল হিসাবে পরিচিত। অথচ, আর্থ সামাজিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া এলাকা হওয়ায় এবং করোনা আবহে লকডাউন থাকার ফলে ব্যাপক হারে বেড়েছে এই স্কুলে স্কুলছুটের সংখ্যা। একাধিক ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে। যাদের অধিকাংশই নাবালিকা বলে খবর।
এমনকি ওই একটি স্কুলেই প্রায় শতাধিক পড়ুয়াদের কোনো হদিশ মিলছে না স্কুল খোলার পর থেকেই। যা যথেষ্ট দুশ্চিন্তার বিষয়। তাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শান্তনু ঘোষাল স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষিকাদের নিয়ে স্কুল ছুট সেই সব ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়িতে যাচ্ছেন। লক্ষ্য ফের তাদের স্কুলে ফেরানো। গত নভেম্বর মাসের ১৬ তারিখ থেকে রাজ্য স্কুল খুলেছে। এখন নবম, দশম একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির অফলাইন ক্লাস হচ্ছে। কিন্তু সুন্দরবনের এই প্রত্যন্ত এলাকায় অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীই স্কুলে উপস্থিত হচ্ছে না। যা চিন্তা বাড়িয়েছে শিক্ষকদের। অবশেষে ছাত্র দরদী প্রধান শিক্ষকের উদ্যোগে কুলতলীর বিভিন্ন প্রান্তে ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়িতে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। মোটর বাইক নিয়ে রওনা দিতে দেখা যায় খোদ প্রধান শিক্ষককে। তাঁরা কথা বলছেন পড়ুয়াদের অভিভাবকদের সঙ্গে।
পিছিয়ে নেই অন্যান্য শিক্ষকও। তাঁরাও অটো চেপে ঘুরে বেরিয়েছেন গ্রামে গ্রামে। রেজিস্ট্রেশন তুলে দেওয়া হয়েছে ছাত্র ছাত্রীদের হাতে। অভিভাবকদের কাছে শিক্ষকরা আবেদন করেন ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে পাঠানোর জন্য। স্কুলের নবম ও একাদশ শ্রেণির অনেক ছাত্রী দীর্ঘ লকডাউন সংসারের অনটনের জন্য বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন পরিবারের লোকজন। যা চিন্তার কারণ সমাজের জন্য। জামতলা ভগবান চন্দ্র হাই স্কুলের বাল্যবিবাহ রোধের জন্য কন্যাশ্রী টিম তৈরি করা হয়েছিল। যা কুলতলির একাধিক বাল্যবিবাহ বন্ধ করেছে। কিন্তু দীর্ঘ লকডাউন চলার কারণে ভেঙে গিয়েছে সেই টিম। বাল্যবিবাহ রোধ করার জন্য অভিভাবকদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকা কুলতলী অনেকেই আবার অর্থ উপার্জনের জন্য বাবা-মার সঙ্গে কাজে গিয়েছে অন্যত্র।তাদের কেও ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করছেন তাঁরা।