দক্ষিণ ২৪ পরগনা: উস্থিতে নাবালককে যৌন নিগ্রহ কাণ্ডে গ্রেফতার এক। অভিযুক্তও মিশনের আবাসিক। তাকে আপাতত পাঠানো হচ্ছে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে। তদন্তে আপাতত জানা গিয়েছে, গলায় চাপ দিয়ে যৌন নিগ্রহ করেছিল ওই নাবালক। তদন্তে আপাতত এক জনের নামই উঠে আসছে। কিশোর জেরায় স্বীকার করেছে, একাই সে এই কাজ করেছে। আগে এরকম ঘটনা ঘটেছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
গত ৩০ তারিখ ঘটনাটি ঘটে উস্থির মিশনের একটি হোস্টেলে। হোস্টেলের ঘর থেকে এক নাবালককে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তখন তার কান-নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। মুখ দিয়ে গ্যাজলা বের হচ্ছিল। ওই কিশোরকে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে এসএসকেএমে স্থানান্তরিত করা হয়। তার এমআরআই রিপোর্টে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। কিশোরের শিরদাঁড়ায় চোট ছিল। তার গলায় ক্ষত ছিল। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, গলা চিপে ধরা হয়েছিল কিশোরের। শ্বাসরোধ করার চেষ্টা হয়েছিল বলে অনুমান করতে থাকেন তদন্তকারীরা। কিশোরের মস্তিষ্কও বেশ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনও আইসিইউ-তে চিকিৎসাধীন সে। মানসিক ও শারীরিক ক্ষত এতটাই যে, হাসপাতালের বেডে শুয়ে কোনও কথাই বলতে পারছে না কিশোর। ফলে প্রাথমিকভাবে তদন্তে বেশ কিছুটা বেগ পেতে হয় পুলিশকে। প্রথমে সন্দেহ গিয়ে পড়ছিল, ওই আবাসিক হোস্টেলের ওয়ার্ডেনের দিকে।
পরে ঘটনার মোড় নেয় অন্য। ওই হোস্টেলে ২২ জন আবাসিক থাকে। প্রত্যেকেই প্রায় সমবয়সী। তাদের আলাদা আলাদাভাবে জিজ্ঞাসা করা হয়। পুলিশ জানতে পারে, নিগৃহীত কিশোর পড়াশোনায় মেধাবী, কিন্তু শারীরিকভাবে দুর্বল। ফলে তাকে অনেক সময়ই বন্ধুরা উত্ত্যক্ত করত। জেরা চলতে থাকে। এক জনের কথায় অসঙ্গতি লক্ষ্য করেন তদন্তকারীরা। তাকে টানা জেরা করা হয়। দুঁদে পুলিশ কর্তাদের চাপের মুখে একসময়ে ভেঙে পড়ে অভিযুক্ত কিশোর।
তদন্তকারীদের কাছে গোটা বিষয়টি স্বীকার করে সে। এই ঘটনা একাই করেছে বলে দাবি করছে কিশোর। তবে পুলিশ সেই বক্তব্যও খতিয়ে দেখছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নিগৃহীত কিশোর এখনও বিপন্মুক্ত নয়। শারীরিক চাপ তো রয়েছে, মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত সে। ফলে সর্বক্ষণ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। অভিযুক্তের কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন নিগৃহীত কিশোরের বাবা।