কাকদ্বীপ: এ বার তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjeea) শিষ্টাচার নিয়ে প্রশ্ন তুললেন একদা তাঁর মন্ত্রীসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তথা অধুনা বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajib Banerjee)। মঙ্গলবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ বিধানসভার নিশ্চিন্তপুরে দলীয় প্রার্থী দীপঙ্কর জানার সমর্থনে এক সভায় রাজীবের কটাক্ষ, ‘শিক্ষা, সংস্কৃতি, শিষ্টাচার জলাঞ্জলি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।’
ডোমজুড়ের বিজেপি প্রার্থীর কথায়,‘মুখ্যমন্ত্রী নিজে বলছেন খেলা হবে। এর থেকে লজ্জার কিছু হতে পারে না। কীসের ইঙ্গিত দিচ্ছেন তিনি?” মাস দুয়েক আগে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে যখন সম্পর্ক চুকিয়ে বিধানসভা থেকে বেরিয়ে আসছিলেন রাজীব, তখন তাঁর হাতে ছিল মমতার ছবি। কৌতুহলী সাংবাদিকদের তিনি বলেছিলেন, মমতা তাঁর কাছে ‘মাদার ফিগার’। সেই মমতাকে নিয়ে রাজীবের এ দিন অভিযোগ, “প্রকাশ্য সভা থেকে বিজেপি কর্মীদের মারার নিদান দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি মহিলাদের বলছেন, বিজেপি এলে ঝাঁটা, খুন্তি, লাটি, হাতা নিয়ে মারধর করতে!” রাজীবের কথায়, ”এটা ভাবা যায়! মুখ্যমন্ত্রীর মুখের ভাষা এমন হতে পারে? বাংলায় এই সংস্কৃতি কি চলবে? শিক্ষা, সংস্কৃতি, শিষ্টাচার জলাঞ্জলি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।’
সম্প্রতি বেশ কয়েকটি সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে বঙ্গ সফরে এসে প্রধানমন্ত্রীর পাল্টা কটাক্ষ ছিল, “আমার চেহারা পছন্দ নয় দিদির।” আর এ দিনের সভা থেকে রাজীব বলেন, এক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দেশের প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলছেন, হোঁদল কুতকুত, কিম্ভুত কিমাকার, দৈত্য-দানব। একজন মুখ্যমন্ত্রীর মুখে এসব শোভা পায়না। পাশাপাশি এদিনের সভা থেকে তৃণমূলের দুর্নীতি নিয়ে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন তৃণমূল এবং মন্ত্রিত্ব-ত্যাগী রাজীব। তাঁর কথায়, ‘মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, একশো শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে। কাজ যদি হয়ে যাবে তাহলে এত ভয় কেন?”
রাজীবের কথায়, আসলে গ্রামের মানুষদের যে অভাব ছিল, সেই অভাব আজও ঘোচেনি। উন্নয়ন হয়েছে কেবল তৃণমূলের কিছু নেতা কর্মী ও তাঁদের আত্মীয়দের। আগে যারা সাইকেল চড়ে ঘুরে বেড়াত, আজ তারা দশ চাকা গাড়ি চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাঁর দাবি, আমফানের পর আমি প্রকাশ্যে দুর্নীতি নিয়ে তিনি সরব হন। কিন্তু তাঁর পুরনো দল তাতে কর্ণপাত করেনি।
আরও পড়ুন: কোন প্রার্থী ভাল, আপনাদের দেখার দরকার নেই, আমি দেখে নেব, আপনারা শুধু ভোটটা দিন: মমতা
এ দিনের সভাস্থল নিয়েও আক্ষেপ শোনা যায় রাজীবের গলায়। বলেন, ”এই সভার অনুমতি পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছিল না। এক সহৃদয় ব্যক্তি মাঠ দেওয়ায় সভা হচ্ছে। এরা এখনও দেওয়াল লিখন পড়তে পারছে না। ২ মে বাংলায় গেরুয়া ঝড় উঠবে। ধমকে চমকে কিছু হবে না।” বিজেপি নেতার আরও অভিযোগ, একসময় সিপিএম যে কায়দায় ধমকাত, চমকাত, সেই কায়দা রপ্ত করেছে তৃণমূলও। এদের হাত থেকে ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা বলে দাবি রাজীবের।