দক্ষিণ ২৪ পরগনা: নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে নিত্যনতুন মুখ উঠে আসছে তদন্তকারীদের স্ক্যানারে। কেউ সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে যুক্ত, কেউ আবার ‘প্রভাবশালী’র প্রভাবে প্রভাবিত। এবার তৃণমূলের (TMC) জেলা পরিষদ সদস্য তথা গঙ্গাসাগর-বকখালি উন্নয়ন পর্ষদের (জিবিডিএ) ভাইস চেয়ারম্যান সন্দীপ পাত্র ওরফে জিকোর নামে টেট দুর্নীতিতে কোটি কোটি টাকা তোলার অভিযোগ উঠল। এই অভিযোগকে সামনে রেখে পোস্টার পড়েছে গঙ্গাসাগরে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সাগর ব্লকের রুদ্রনগর, মন্দিরতলা, খুঁদিগুড়িয়াপুল-সহ একাধিক এলাকার দোকান ও বাড়ির দেওয়ালে রঙিন এই পোস্টার দেখা যায়। এই পোস্টারে লেখা আছে, ‘সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরার অনুপ্রেরণায় জেলা পরিষদ সদস্য সন্দীপ পাত্র ও তপন পাড়িয়ারী টেট দুর্নীতিতে মিডলম্যান হিসাবে সাগর বিধানসভা থেকে কোটি কোটি টাকা তুলে বেপাত্তা। শিক্ষা নিয়ে সাগরে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি হল কেন বঙ্কিম হাজরা জবাব চাই, জবাব দাও।’ সৌজন্যে লেখা রয়েছে ‘সাগরদ্বীপবাসী’। এই পোস্টার ঘিরে সকাল থেকেই এলাকায় রাজনৈতিক চাপানউতর তৈরি হয়েছে। সিপিএম, বিজেপির তরফে শাসকদলের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই সুর চড়ানো শুরু হয়েছে। যদিও সন্দীপ পাত্র এসব গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁর বক্তব্য, পোস্টার পড়ার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
সন্দীপ পাত্র বলেন, “কিছু লোক রাতের অন্ধকারে এসব করাচ্ছে। এসব ফেক নিউজ। আমি সাগরে আছি। বঙ্কিম হাজরা সাগরের মানুষের কাছে শুধু নাম না, বিশ্বস্ততার ব্র্যান্ড, মানুষের আস্থা ভরসা। বিভিন্নভাবে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।” সাগরের বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরাও জানান, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন।
স্থানীয় সিপিএম নেতা বিধান দাস বলেন, “বাম আমলে সাগরদ্বীপ শিক্ষাক্ষেত্রে প্রথম স্থানে ছিল। ২০১১ সালের পর থেকে শুধুই দুর্নীতি। এমন একটা সরকার রাজ্য চালায়, তাদের সঙ্গে দুর্নীতি ছাড়া আর কিছু নেই। সাগরদ্বীপের একজন মন্ত্রী, তাঁর এলাকায় চাকরিসংক্রান্ত পোস্টার পড়ছে শুনলেও খারাপ লাগে।”
একই সুর বিজেপির বিধান পাড়ুইয়েরও। তাঁর কথায়, “পাহাড় থেকে সাগর তৃণমূলের দুর্নীতির কোনও শেষ নেই। সাগরের বিধায়কের ঘনিষ্ঠ মিডলম্যান যার ডাকনাম জিকো রুদ্রনগরে বাড়ি, তপন পড়িয়ারী তারা প্রাইমারি টেটে কোটি কোটি টাকা তুলে পালিয়েছে। বেকার ছেলেরা হন্যে হয়ে খুঁজছে। এদিকে বিধায়ক নির্বাক। সন্দীপ পাত্র দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার তৃণমূলের জেলা পরিষদের সদস্য। চার মাস পলাতক। এলাকার মানুষ পরিষেবা পাচ্ছেন না।”
তবে সাগরের বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা বলেন, “রুদ্রনগরে যে পোস্টার পড়েছে তা আমি দেখিনি, ফেসবুকে দেখেছি। এসব একেবারেই মিথ্যা। যারা এটা করেছে, তাদের বুকে পাটা থাকলে নিজেদের নাম দিতে পারত। না লিখে সাগরদ্বীপবাসী লিখেছে। সন্দীপ বা তপন এরা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত কি না বলতে পারব না। আমি স্বচ্ছতার সঙ্গে সবসময়। সামনে পঞ্চায়েত ভোট। তাই কালিমালিপ্ত করার জন্য এসব করছে।”