বারুইপুর: ট্রেনের কামরাতেই প্রসব যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন মহিলা। রেল পুলিশের (Rail police) সাহায্যেই জন্ম দিলেন পুত্র সন্তানের। পুলিশের মানবিক মুখ দেখা গেল বারুইপুর স্টেশনে (Baruipur station)। সুস্থ আছেন মা ও সন্তান উভয়েই। পুলিশের কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকবেন বলে উল্লেখ করলেন গর্ভবতী মহিলার স্বামী।
এমনিতেই কোভিড পরিস্থিতিতে চারপাশে আতঙ্ক আর উদ্বেগের ছবি। এরই মধ্যে অসুস্থ বোধ করছিলেন পূজা মণ্ডল। তাই তাঁকে শিশুমঙ্গল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁর স্বামী সুভাষ মণ্ডল। কিন্তু ট্রেনের মধ্যেই বাধে বিপত্তি। কামরাতেই যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকেন তিনি। স্বামী সুভাষ মণ্ডল জানিয়েছেন, সন্তানের জন্মের মাস খানেক বাকি ছিল। তার আগেই এ ভাবে যন্ত্রণায় কাতরাতে দেখে ভয় পেয়ে যান তিনি। ঘটনাটি ঘটে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার বারুইপুর স্টেশন।
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার মাধবপুরের বাসিন্দা সুভাষ মন্ডল পেশায় স্কুল শিক্ষক। তিনি তার গর্ভবতী স্ত্রী পূজা মন্ডল কে নিয়ে আপ লক্ষীকান্তপুর ট্রেনে উঠেছিলেন। প্রচন্ড প্রসব যন্ত্রণায় ছটপট করছিলেন ওই মহিলা রেল যাত্রী। পাশে থাকা রেল যাত্রীরা খবর দেন বারুইপুর জিআরপিতে। সঙ্গে সঙ্গেই বারুইপুর জিআরপির ওসি অর্ণব দত্তের উদ্যোগে মহিলা পুলিশকর্মীরা পৌঁছে যান ওই কম্পার্টমেন্টে। অন্য দিকে স্টেশন মাস্টারকে খবর দেওয়া হয় ট্রেনটিকে দাঁড় করিয়ে রাখার জন্য। তারপরে প্রসব যন্ত্রণায় ছটকানো ওই মহিলা রেল যাত্রীকে স্ট্রেচারে করে নামানো হয় প্লাটফর্মে। সেখানেই এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন তিনি। সদ্যজাত পুত্র সন্তান ও তাঁর মাকে স্ট্রেচারে করে পাঠানো হয় বারুইপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। সেখানেই লেবার রুমে চিকিৎসা চলছে মা ও সদ্যজাত পুত্রসন্তানের। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মা ও সন্তান দু’জনেই সুস্থ আছেন। কয়েক ঘণ্টা পরেই তাঁদের জেনারেল ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা হবে।
আরও পড়ুন: রাতের অন্ধকারে বোমাবাজিতে উত্তপ্ত নানুর, ভয় দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ বিজেপির
রোজ বন্দুক কিংবা লাঠি হাতে দুবৃত্তদের সামলান তাঁরা। কিন্তু এ দিন অন্য ভুমিকায় দেখা গেল সেই পুলিশকে। তাদের সহযোগিতাতেই প্লাটফর্মে ফুটফুটে এক পুত্র সন্তানের জন্ম। আর তাতে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করলেন পূজা মণ্ডলের স্বামী। এদিন তিনি বলেন, ‘রেল পুলিশ আজ আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন। ওনারা যে ভাবে সঙ্গে সঙ্গে ভ্যান জোগাড় করে অত কম সময়ের মধ্যে আমার স্ত্রী’কে নিয়ে গিয়েছেন, তাতে আমরা চিরকৃতজ্ঞ থাকব।’