জয়নগর: বারুইপুরের যুবা প্রমোটারের হত্যার ঘটনায় নয়া মোড়। বার ড্য়ান্সার যুবতীর বয়ানের ভিত্তিতে শনিবার গ্রেফতার হল তিনজন। এঁদের মধ্যে একজন মহিলা। পেশায় প্রোমোটার অভীককে বৃহস্পতিবার রাতে মারধর করার অভিযোগেই গ্রেফতার করা হয়েছে এই তিনজনকে, খবর পুলিশ সূত্রে। শনিবার গভীর রাতে প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে ঘুরতে বের হন অভীক। তখন গ্রামবাসীরা চোর সন্দেহে তাঁদের বেধড়ক মারধর করে।মারের আঘাতেই ঘটনাস্থানেই শেষ হয়ে যায় তরুণ যুবকের প্রাণ। তবে এখনও পুলিশের তরফে পরিষ্কার করে এই বিষয়ে কিছু বিবৃতি দেওয়া হয়নি। পাশাপাশি অভীকের পরিবারের থেকেও কোনও রকম প্রতিক্রিয়া মেলেনি যে কী কারণে গতকাল অভীক এবং প্রিয়াঙ্কা নিজেদের বাড়ির এলাকা ছেড়ে বেগমপুরে গিয়েছিলেন।
সূত্রের খবর, শুক্রবার রাতভর ম্যারাথন জেরা করা হয় প্রিয়াঙ্কা সরকারকে। তাঁরই বয়ানের ভিত্তিতে পুলিশ ওই তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। পরে যদিও প্রিয়াঙ্কাকে পুলিশ তাঁর মায়ের হাতে তুলে দিয়েছে। এদিকে, ছাড়া পাওয়ার পর প্রিয়াঙ্কা সংবাদমাধ্যমকে জানায়, তাঁর সঙ্গে অভীকের ‘দাদার’ মত সম্পর্ক ছিল। এই প্রথম নয়, এর আগে বহুবার একসঙ্গে তাঁরা রাত্রিবেলা ঘুরতে গিয়েছেন।
সংবাদ মাধ্যমকে কী বললেন প্রিয়াঙ্কা?
“আমিই শুক্রবার প্রথম পুলিশকে খবর দিয়েছিলাম। অভীকের সঙ্গে আমার প্রায় ৯ বছরের সম্পর্ক। আমায় অভীক বোনের মতো ভালবাসত। আমিও অভীককে দাদা বলে ডাকতাম। এছাড়া আর কোনও সম্পর্ক ছিল না। অভীক মদ খেয়েছিল। আমি ছিলাম না। আমরা প্রথম-প্রথম সোনারপুরের দিকেই ঘুরতে যেতাম। গতকালই সোনারপুরের বাইরে এসেছিলাম। এর আগে এতটা ভিতরে কখনও আসিনি।”
প্রসঙ্গত, বারুইপুরের বেগমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০০ কলোনি। গ্রামবাসীদের দাবি দীর্ঘদিন থেকেই ওই এলাকায় হাঁস-মুরগী চুরি হয়ে যাচ্ছে তাঁদের। এরপর রাতের বেলা ওই এলাকায় বাইক নিয়ে আসেন অভীক প্রিয়াঙ্কা। ফলত অত-রাতে দু’জনকে দেখে সন্দেহ হয় এলাকাবাসীর। চোর ভেবে চিৎকার করতে শুরু করেন তাঁরা। এরপর বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রেখে চলে ব্যাপক মারধর। মারের আঘাতে তখনই লুটিয়ে পড়েন ওই প্রমোটার। অন্যদিকে, অভীককে মারতে দেখে লুকিয়ে পড়ে প্রিয়াঙ্কা। যদিও, তাঁকেও খুঁজে পেয়ে যায় গ্রামবাসীরা।
প্রিয়াঙ্কার দাবি অনুযায়ী, ওই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে সেই প্রথম পুলিশকে খবর দেয়। এলাকায় পুলিশ এলে তাদের গাড়ি আটকেও বিক্ষোভ দেখায় গ্রামবাসী। পুলিশের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী অভিযোগ তোলে চোরকে বাঁচাতে এসেছে তারা। যদিও কারোর কথা পাত্তা না দিয়েই কাজ চালিয়ে যায় পুলিশ। যুবককে সেখান থেকে উদ্ধার করে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে এলে সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে।