নন্দীগ্রাম: আজ, মঙ্গলবার নন্দীগ্রাম দিবস। আর এই নন্দীগ্রাম দিবসেও শহিদ স্মরণ নিয়ে শাসকদল ও বিরোধী দলনেতার কাজিয়া তুঙ্গে। যদিও আদালতের নিয়ম মেনে গোকুলনগর ও সোনাচূড়া- দু জায়গাতেই নির্দিষ্ট সময় বেধে শহিদ স্মরণ করলেন শুভেন্দু অধিকারী। আর সেই সভা থেকেই নাম না করে তৃণমূল নেতৃত্বকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন তিনি। যদিও পাল্টা জবাব দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভানেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
এদিন সকালে আদালতের নির্দেশ মেনে নন্দীগ্রামের গোকুলনগরে এবং সোনাচূড়ায় শহিদ স্মরণ করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। একেবারে কেন্দ্রীয় বাহিনী সঙ্গে নিয়ে কীর্তন সহকারে শহিদ বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি। গোকুলনগরে কীর্তনের সঙ্গে শহিদ-স্মরণ করার পর সোনাচূড়ায় শহিদ পরিবারের পা ধুইয়ে, বস্ত্র প্রদান করেন শুভেন্দু। তারপরই শাসকদলকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন বিরোধী দলনেতা। নাম না করে শাসকদলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, “রাজ্যের গণতন্ত্র ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। এমনিতেই ঘরে ঢুকিয়ে দিয়েছি। বাকিটা সাফ করব। আর যারা যা যা করছেন, সব চন্দ্রগুপ্তের খাতায় লেখা থাকবে। লক্ষ্ণণ শেঠের যা অবস্থা হয়েছে আপনাদেরও সেটাই হবে। সবাইকে গ্যারেজ করে দেব।” এরপরই আগামী বছর দেখা হবে বলেও শহিদ পরিবারকে কথা দিয়ে যান তিনি। নন্দীগ্রাম আন্দোলন কোনও নির্দিষ্ট নেতা-নেত্রীর আন্দোলন ছিল না। তৃণমূল এই আন্দোলন দখল করার চেষ্টা করেছিল বলেও তোপ দাগেন তিনি।
শুভেন্দু অধিকারীর এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভানেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, “এই ধরনের কথা যাঁরা বলেন বোঝা যায়, উনি কতটা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এই ধরনের কথা শহিদ দিবসের দিন যত কম বলতেন তত ভাল লাগত। এই ধরনের কথা বিরোধী দলনেতার মুখে মানায় না। তবে অনেকে কি না বলে অনেকে কি না খায়- সেটায় কিছু যায় আসে না।” একইসঙ্গে পাল্টা হুঁশিয়ারির সুরে নাম না করে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “উনি (শুভেন্দু অধিকারী) মনে করছেন উনি সর্বেসর্বা। কাকে গ্যারেজ করবেন! যাঁরা এই ধরনের কথা বলেন তাঁরা নিজেরা কবে গ্যারেজ হবেন বুঝতে পারেন না।” শহিদ দিবস পালন নিয়েও চন্দ্রিমার তোপ, “পদ্ম ফুলের ভুঁইফোড় নেতা নিজের অহঙ্কার ফলাতে এসেছেন। অহংকার হলে পতন অনিবার্য। কে আগে মালা দেবে সেটা নিয়ে প্রতিযোগিতা চলছে।”
উল্লেখ্য, নন্দীগ্রাম নিয়ে দড়ি টানাটানি তুঙ্গে। সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, সকাল ৮টা থেকে সকাল ১০ টার মধ্যে সভা করতে হবে শুভেন্দুকে। সকাল সাড়ে ১০ টার মধ্যে জায়গা খালি করে দিতে হবে। মামলাকারীরা শান্তিপূর্ণ মিছিল করবে, কোনওভাবেই যাতে জনজীবন ব্যাহত না হয়। একই সময়ে দুটি রাজনৈতিক দলকে অনুমতি দেওয়া হলে আইন শৃঙ্খলা সমস্যা হতে পারে। তাই আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, বেলা ১১টা থেকে ৩টে’র মধ্যে তৃণমূল মিছিল করতে পারবে। পৃথক রাজনৈতিক দলকে সময় ভাগ করে মিছিল করার অনুমতি দিয়েছে হাইকোর্ট।