বিজেপি কর্মীর দুই বোনকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ ও যৌননিগ্রহের অভিযোগ দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে, গ্রেফতার ১
নিগৃহীতা আরও জানিয়েছেন, ওই পাঁচ দুষ্কৃতী তাঁদের দুই বোনের পূর্বপরিচিত নন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতে মেয়েদের চিৎকার শুনে বেরিয়ে আসেন বাইরে। তাঁরা বেরিয়ে এলেই পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা।
মালদা: বিয়েবাড়ি থেকে ফেরার পথে বিজেপি (BJP) কর্মী পরিবারের আদিবাসী দুই বোনকে তুলে নিয়ে একজনকে গণধর্ষণ ও অন্যজনের উপর যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠল কয়েকজন দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। বিজেপির (BJP) অভিযোগ, ওই দুষ্কৃতীরা তৃণমূল আশ্রিত। উত্তপ্ত হবিবপুর।
হবিবপুরের মঙ্গলপুরার নিগৃহীতা যুবতীর অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে বিয়েবাড়ি থেকে দিদির সঙ্গে ফিরছিলেন ওই তরুণী। সেইসময় পাঁচ দুষ্কতী মোটরসাইকেলে এসে তাঁদের পথ রোধ করে। তারপর জোর করে দুই বোনকে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। এরপর, ওই দুষ্কৃতীরা পুকুরপাড়ে গিয়ে নিগৃহীতার দিদিকে ধর্ষণ এবং তাঁর উপর যৌন নিগ্রহ চালায় বলে অভিযোগ। তাঁদের চিৎকারে আশেপাশের লোক ছুটে আসেন। তখন দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। নিগৃহীতা আরও জানিয়েছেন, ওই পাঁচ দুষ্কৃতী তাঁদের দুই বোনের পূর্বপরিচিত নন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতে মেয়েদের চিৎকার শুনে বেরিয়ে আসেন বাইরে। তাঁরা বেরিয়ে এলেই পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। দুই বোনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। খবর পেয়ে ছুটে আসার চেষ্টা করেন দুই মেয়ের মা। কিন্তু, মানসিক আঘাতে হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই মহিলার মৃত্যু হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই নিগৃহীতার প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়েছে। অন্য আক্রান্তের অবস্থা সঙ্গীন। আপাতত হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন তিনি। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তর্জা।
গেরুয়া শিবিরের (BJP) অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা সন্ত্রাস ছড়াতে এই কাজ করেছে। ভোটের পর থেকেই এমন সন্ত্রাস চলছে। ইতিমধ্যেই, মালদা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে বিজেপি। বিরোধী শিবিরের দাবী, দোষীদের যত দ্রুত সম্ভব শাস্তি দিতে হবে। বিজেপি জেলা সভাপতি গোবিন্দ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, “কিছুদিন আগে মানিকচকে এক তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী একই ঘটনা ঘটিয়েছে। সপ্তাহ না পেরতেই ফের ধর্ষণের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি। এটি যে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের কাজ তা আর বলে দিতে হয় না। রাজ্যে সন্ত্রাস, হিংসার রাজনীতি চলছে। নিগৃহীতা দুজনের পরিবার বিজেপির সদস্য। সেইজন্যেই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই কুকাজ করেছে। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। আর ঠিক এইজন্যেই রাজ্যে ৩৫৬ ধারা চালু করা উচিত।” বিরোধী শিবিরের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের দাবি, এই ঘটনায় তাদের কোনও কর্মী সমর্থক জড়িত নয়। জেলা তৃণমূল (TMC) মুখপাত্র শুভময় বসু বলেন, “এই ঘটনা অত্য়ন্ত নিন্দনীয়। দোষীদের অবশ্যই শাস্তি পাওয়া উচিত। তবে সব ঘটনাকে রাজনৈতিকভাবে দেখা উচিত নয়। গোটা ভারতবর্ষে সামাজিক অবক্ষয়ের জন্য দায়ী বিজেপি। বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে তারা। দুষ্কৃতীরা কোনও দলের হয় না। যারা দুষ্কৃতী তারা দুষ্কৃতী। মালদা পুলিশের কাছে অনুরোধ, হবিবপুরের এই ঘটনায় দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হোক। রাজ্য় সরকারের পক্ষ থেকেও ওই পরিবারকে সব রকম সাহায্য করা হবে।”
ঘটনায়, মালদা পুলিশ সুপার অলোক বাজোরিয়া বলেন, “আমরা নিগৃহীতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁদের বয়ান অনুযায়ী, ছোট বোনটিকে কুপ্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তবে বড়বোনের সঙ্গে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় পাঁচ অভিযুক্তের মধ্যে দুইজনকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। শৈলেন মাহাতো নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে। ওই দুই নিগৃহীতার মেডিক্যাল পরীক্ষাও করাতে দেওয়া হয়েছে।”
আরও পড়ুন: ‘জিন্দাবাদ অনুব্রত, বিজেপি করে ভুল করেছি’, ঘাসফুলে ‘ঘরওয়াপসি’ ২০০ বিজেপি কর্মীর